পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. মঞ্জুর হোসেন বলেছেন, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি বর্তমানে কিছুটা হলেও স্থিতিশীল অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, এর স্বস্তির বিষয় হলো দেশের রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা অর্থনীতির স্থিতিশীলতার গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ড. মঞ্জুর হোসেন উল্লেখ করেন, মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও চালের মূল্য এখনো ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা নিয়ন্ত্রণে আসলে সম্ভবত আরও বেশি মূল্যস্ফীতি
পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. মঞ্জুর হোসেন বলেছেন, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি বর্তমানে কিছুটা হলেও স্থিতিশীল অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, এর স্বস্তির বিষয় হলো দেশের রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা অর্থনীতির স্থিতিশীলতার গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ড. মঞ্জুর হোসেন উল্লেখ করেন, মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও চালের মূল্য এখনো ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা নিয়ন্ত্রণে আসলে সম্ভবত আরও বেশি মূল্যস্ফীতি কমে যেতে পারে। তিনি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বেসরকারি খাতের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, মূল্যস্ফীতি কমানোর পাশাপাশি বিনিয়োগ থেমে থাকবেন না, বরং তা অব্যাহত রাখতে বেশি নজর দেওয়ার প্রয়োজন। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমলেও, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বাড়ানো এখন অপরিহার্য বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। ড. মঞ্জুর হোসেন আরও বলেন, সরকার এলডিসি (লোনি ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রি) থেকে উত্তরণের বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে, তবে এর জন্য আমাদের যেন পুরোপুরি প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা বাড়ানো এবং অর্থনীতিকে টেকসই রূপদান করতে এগিয়ে আসার ওপর জোর দেন তিনি।
অর্থনীতি খাদের কিনারা থেকে উদ্ধার পাওয়ায় সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, তাই বিনিয়োগ সম্প্রসারণ এবং ব্যাংক খাতকে শক্তিশালী করার গুরুত্ব তৃপ্তি সহকারে তুলে ধরেন তিনি। তিনি উল্লেখ করেন, ব্যাংক ঋণের সুদহার বেশি থাকা, এবং বাণিজ্য পরিস্থিতির অনিশ্চয়তা যেখানে বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে, তার কারণগুলো খতিয়ে দেখা জরুরি।
সেমিনারে ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, বৈশ্বিক রাজনৈতিক অস্থিরতা, অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা, ঋণ প্রবাহে বাধা, জ্বালানি সরবরাহের সমস্যা, দুর্নীতি ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জের কারণে বেসরকারি খাতের অগ্রগতির প্রত্যাশা কমেছে। তিনি জানান, এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণে আরও কিছুদিন সময় প্রয়োজন, যাতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করা যায়।
প্রবন্ধে তিনি বলছেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, মুদ্রানীতি, মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ, কৃষি ও শিল্প খাতসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, শুল্ক ও বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা বৃদ্ধি পেলে বৈশ্বিক অর্থনীতির গতি ধীর হবে, এবং ২০২৫ সালে গ্লোবাল প্রবৃদ্ধির হার ২.৩ শতাংশে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে, এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য কমপক্ষে ৩ বছর স্থগিতের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
তাসকীন আহমেদ জানান, বৈশ্বিক অস্থিরতা ও অভ্যন্তরীণ প্ররোচনায় শিল্প-কারখানার চ্যালেঞ্জগুলো আরও বেড়ে গেছে। তবে তিনি মনে করেন, প্রস্তুতি নিয়ে সরকার ও বেসরকারি খাত মিলেই তাদের প্রতিরোধ সম্ভব। তিনি আশা প্রকাশ করেন, যত দ্রুত সম্ভব সব পক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ তার প্রস্তুতির কাজ সম্পন্ন করবে।
উল্লেখ্য, সেমিনারে বিভিন্ন বিশ্লেষক, গবেষক এবং আর্থিক বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা বলছেন, অভ্যন্তরীণ সঞ্চয়, কর আদায়, অবকাঠামো উন্নয়ন ও ডিজিটাল অর্থনীতি গ্রোথের জন্য অপরিহার্য। পাশাপাশি, সংকটের সময়ে এসএমই খাতকে উন্নত করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ শ্রমশক্তির উন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেন।