দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রবাস জীবন শেষ করে আগামী ২৫ ডিসেম্বর ঢাকায় পা রাখবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার এই প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, যা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। এ উপলক্ষে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলায় আনন্দ র্যালি ও সমাবেশের মাধ্যমে নেতাকর্মীরা তার
দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রবাস জীবন শেষ করে আগামী ২৫ ডিসেম্বর ঢাকায় পা রাখবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার এই প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, যা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। এ উপলক্ষে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলায় আনন্দ র্যালি ও সমাবেশের মাধ্যমে নেতাকর্মীরা তার ফিরির উদযাপন শুরু করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, তারেক রহমানের এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন শুধুমাত্র একটি ব্যক্তিগত ঘটনা নয়, এটি গণতান্ত্রিক শক্তির জন্য নতুন ভোরের সূচনা। বিশেষ করে, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের জন্য তার ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে, দেশের রাজনৈতিক মহলে ঐক্য, উন্নয়ন ও ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে তারেক রহমানের অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
দলের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তার দেশের ফেরার পর গুলশানের ফিরোজা ও পাশে থাকা একটি বাসভবনে অবস্থান করবেন তিনি। এই বাড়ির জন্য প্রস্তুতি চলমান থাকলেও, যদি দ্বন্দ্ব বা বিলম্ব হয়, তবে তিনি খালেদা জিয়ার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’তে স্থানান্তর হতে পারেন। এদিকে, তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের খবর পেয়ে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে।
নিরাপত্তাজনিত কারণেও সরকার অত্যন্ত সিরিয়াসভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, তারেক রহমানের নিরাপত্তায় অঙ্গীকারদারী পুলিশ এবং বিভিন্ন সংস্থা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজধানীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে তার গমনপথের প্রতিটি প্রবেশদ্বার ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কড়া নজরদারি ও চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। তার বাসভবন ও আশপাশের এলাকা বিশেষ নজরদারিতে থাকবে।
তারা আরও জানিয়েছেন, তার আবাসন গুলশান অ্যাভিনিউর বাড়ির মেরামতের কাজ দ্রুত চলছে। তবে যদি সেই কাজ সম্পন্ন না হয়, তবে তিনি খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’তে থাকতে পারেন। এই বাড়িতেও তিনি নিরাপত্তার যাবতীয় ব্যবস্থা পাবেন। তার চলাচল ও যোগাযোগের পথগুলোও কঠোর গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকবে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে, ২৩ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সদস্যরা তার নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকবে। বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত কয়েকশো পুলিশ সদস্য বিভিন্ন চেকপোস্ট ও নজরদারির মাধ্যমে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। বিমানবন্দর ভিত্তিক নিরাপত্তা পরিকল্পনাও জোরদার করা হয়েছে।
তাদের বাসস্থানও প্রস্তুত হচ্ছে; গুলশান অ্যাভিনিউর বাড়ির জরুরি মেরামত ও প্রস্তুতির কাজ চলমান। যদি সব সুবিধা সময়মত হয়, তবে তিনি তার নিয়মিত বাসস্থানে ফিরতে পারেন, আর না হলে বাইরে ভাসমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে।
নিরাপত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, তার লন্ডন-ঢাকা রুটের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুটি কেবিন ক্রুকে সরানো হয়েছে। তারা হলেন জুনিয়র পার্সার মো. সওগাতুল আলম এবং ফ্লাইট স্টুওয়ার্ডেস জিনিয়া ইসলাম। এ বিষয়ে গোয়েন্দাদের ধারণা, ভিআইপি যাত্রীর নিরাপত্তা বিশ্লেষণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, কারণ তাদের মধ্যে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানা গেছে।
পূর্বেও এরকম একজনের জন্য এই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, যেমন চলতি বছরের মে মাসে খালেদা জিয়ার জন্য। ওই সময়ও গোয়েন্দাদের রিপোর্টে তার নিরাপত্তা নিয়ে গুরুত্বসহকারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ছিল। সব মিলিয়ে, এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক অধ্যায় হিসেবে গণ্য হবে, যেখানে সব শ্রেণির রাজনৈতিক নেতাকর্মী, বিশ্লেষক এবং সাধারণ মানুষ তাকিয়ে রয়েছেন।











