ইউক্রেনে ভয়াবহ রাশিয়া হামলা, নিহত ২৬

ইউক্রেনে ভয়াবহ রাশিয়া হামলা, নিহত ২৬

ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে রাশিয়ার ব্যাপক এবং ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে দেশটি। এই হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে অল্প বয়সের তিন শিশুও রয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৯৩ জন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধের পুরো মাত্রায় শুরু হওয়ার পর থেকে এ অঞ্চলটিতে এটি অন্যতম প্রাণঘাতি রুশ আক্রমণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। স্থানীয় সময় গত বুধবার ভোরে রুশ

ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে রাশিয়ার ব্যাপক এবং ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে দেশটি। এই হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে অল্প বয়সের তিন শিশুও রয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৯৩ জন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধের পুরো মাত্রায় শুরু হওয়ার পর থেকে এ অঞ্চলটিতে এটি অন্যতম প্রাণঘাতি রুশ আক্রমণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। স্থানীয় সময় গত বুধবার ভোরে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর টার্পোনিলের উপর এই হামলা চালিয়েছে, যার খবর দিয়েছে বিবিসি।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়া লভিভ ও ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্কসহ অন্যান্য অঞ্চলেও আক্রমণ পরিচালনা করেছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ শহরের তিনটি জেলায় ড্রোনের মাধ্যমে হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে ৩০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়ান বাহিনী একটি এক্স-১০১ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে এক আবাসিক ফ্ল্যাটে আঘাত হেনেছে, যা ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের কারণ হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছেন, এই হামলায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়েছে এবং অনেক হতাহত পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে আছেন। এর পাশাপাশি জানানো হয়েছে, রাশিয়া এই হামলায় মোট ৪৭০টিরও বেশি ড্রোন এবং ৪৭টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।

অতিরিক্তভাবে, বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকা চালু করা হয়েছে, যাতে সাধারণ জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর আগে, উত্তরাঞ্চলীয় শহর খারকিভে রুশ হামলায় কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন।

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের জন্য এক প্রকারের শান্তি প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা করছে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউক্রেনের কিছু ভূখণ্ড ও অস্ত্র ছাড় দিতে হতে পারে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সূত্রে জানা গেছে, ওয়াশিংটন কিয়েভকে মূল প্রস্তাবের একাংশ মানতে বলেছে। বিষয়টি কিয়েভের জন্য বড় একটি ধাক্কা হতে পারে, কারণ পূর্ব ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন তীব্রতর হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি গত সপ্তাহে সংসদে বলেছেন, তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছেন এবং দেশের পরিস্থিতি মোকাবেলায় কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।

হোয়াইট হাউজ এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানালেও, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, আলোচনা চলমান এবং যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের সমাধানে বিভিন্ন ধারণা নিয়ে কাজ করছেন। একজন উচ্য কূটনীতিক জানিয়েছেন, তারা জানেন যে প্রস্তাবগুলো নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে, তবে ইউক্রেনের মতামত কাছে নেয়া হয়নি।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের সাথে বৈঠকের পর জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের লিচ্ছা ও কার্যকর নেতৃত্বের মাধ্যমে যুদ্ধ থামানো সম্ভব। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ট্রাম্প প্রশাসনের ক্ষমতা নিয়ে আস্থা প্রকাশ করেছেন। এ সময়, তুরস্ক শান্তি আলোচনা জোরদারের জন্য বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছেন এবং আঙ্কারায় আলোচনা অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত বলেও জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রভাবে ইউক্রেনের বন্ডের দর কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনায় ২০২২ সালের জুলাইয়ে ইস্তাম্বুলে শেষবারের মতো মুখোমুখি হয়েছিল ইউক্রেন ও রাশিয়া। এরপর থেকে আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে।

মার্কিন শরিকরা বলছেন, যুদ্ধের দ্রুত সমাপ্তি জন্য এখনো মস্কোর কিছু শর্ত থেকে সরে আসার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। প্রেসিডেন্ট পুতিন দাবি করেন, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে এবং চারটি প্রদেশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। মোদিকে পুরোপুরি এই দাবি মানতে রাজি নন এবং ইউক্রেনও এসব শর্ত মানতে আপত্তি জানাচ্ছে।

বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ১৯ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। শীতের কারণে রুশরা নিয়মিত ইউক্রেনের জ্বালানি কেন্দ্রগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। ন্যাটো সদস্য তুরস্ক এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের সাথে সুসম্পর্ক রেখেছে, যেমন ২০২২ সালে প্রথম শান্তি আলোচনা হয়েছিল। তবে এই আলোচনায় রুশ প্রতিনিধিরা অংশ নেননি। ক্রেমলিন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যে যদি আলোচনা ফলপ্রসূ হয়, পুতিন তা নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।

অপরদিকে, মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভকে পূর্ব ইউক্রেনের কিছু এলাকা মস্কোকে ছাড় দেওয়ার জন্য বলেছে, তবে এর বিনিময়ে আস্থা ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিবে। এই প্রস্তাবের সমালোচকরা বলছেন, এটি ইউক্রেনকে চাপে ফেলার মতো। ইউক্রেনের অবস্থান বা ইউরোপের মিত্রদের মতামত বিবেচনায় না নিলে এই ধরনের সমাধান দীর্ঘদিন টিকে থাকবে না।

এছাড়া, মার্কিন সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরা কিয়েভে অবস্থান করছেন, যারা জেলেনসিকির সঙ্গে বৈঠক করবেন। এই বৈঠকগুলো চলমান থাকবে এবং যুদ্ধের দ্রুত সমাধানে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos