সাংবাদিকদের জন্য গণমাধ্যম নীতিমালা সংশোধনের দাবি

সাংবাদিকদের জন্য গণমাধ্যম নীতিমালা সংশোধনের দাবি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাংবাদিকরা এক গুরুত্বপূর্ণ দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, নির্বাচনী সময়ের জন্য প্রণীত গণমাধ্যম নীতিমালায় বেশ কিছু অসঙ্গতি ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, যা সংশোধন করতে হবে। এই দাবি জানাতে সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সাংবাদিক সংগঠনগুলো—ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) এবং রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রাসি (আরএফইডি)—তারা তাদের

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাংবাদিকরা এক গুরুত্বপূর্ণ দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, নির্বাচনী সময়ের জন্য প্রণীত গণমাধ্যম নীতিমালায় বেশ কিছু অসঙ্গতি ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, যা সংশোধন করতে হবে। এই দাবি জানাতে সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সাংবাদিক সংগঠনগুলো—ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) এবং রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রাসি (আরএফইডি)—তারা তাদের প্রস্তাব ও মতামত তুলে ধরেন। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে। এতে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিবসহ শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের পর বিজেসি চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল হক রাজা সাংবাদিকদের জানান, ‘নির্বাচন কমিশন যে গণমাধ্যম আচরণবিধি তৈরি করেছে, তাতে কিছু প্রয়োজনীয়তা না থাকার পাশাপাশি কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমরা যৌথভাবে বিভিন্ন সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে এই নীতিমালার খসড়া প্রস্তুত করেছি, যেখানে নির্বাচনের বিশ্লেষক, অংশীদার ও সংবাদকর্মীরা মতামত দিয়েছেন। আজ আমরা সেই সুপারিশগুলো নির্বাচন কমিশনের হাতে তুলে দিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করার আশাবাদ প্রকাশ করেছে কমিশন। বিশেষ করে, ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রিসাইডিং অফিসারকে অবহিত করার বাধ্যবাধকতা সাংবাদিকদের জন্য অপ্রয়োজনীয় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। যদি সাংবাদিকদের বৈধ আইডি কার্ড থাকে, তাহলে আলাদা অনুমতির প্রয়োজন নেই।’

বৈঠকে, ভোটকেন্দ্রে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট থাকার সময়ের বিষয়ে আপত্তি জানানো হয়। রেজওয়ানুল হক রাজা জানান, ‘এটি কোনও কঠোর নিয়ম নয়; বরং কেন্দ্রের জায়গার সীমাবদ্ধতার কারণে কিছু সাধারণ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এটি সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা সীমিত করার জন্য নয়।’

বিজেসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারি, নির্বাচন কমিশন আন্তরিকভাবে সাংবাদিকদের সহযোগিতা করতে চায়। তারা মনে করেন, সিসি ক্যামেরা না থাকলেও, ক্যামেরা উপস্থিত থাকলে ভোটের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখা সহজ হয়।’

অন্য আলোচনায়, সরাসরি সম্প্রচারও উত্থাপিত হয়। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, দায়িত্বশীল আচরণ করে লাইভ সম্প্রচারে যেন ভোটাদানের প্রক্রিয়া ব্যাহত না হয়। ওই সময়, কোনো অনিয়ম বা কেন্দ্র দখলের ঘটনা ঘটলে, সাংবাদিকদের দায়িত্ব তা তুলে ধরা। তবে, এই পরিস্থিতিতে কঠোর সম্প্রচার নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা সম্ভব নয় বলেও জানানো হয়।

সাংবাদিকদের জন্য এই নীতিমালার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরে তারা আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচন কমিশন দ্রুত তার প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করে সংশোধন করলে, সাংবাদিকরা আরও মুক্তভাবে কাজ করতে পারবেন। এতে ভোটের স্বচ্ছতা ও জনগণের জানার অধিকারও সুরক্ষিত হবে।

আরএফইডি সভাপতি কাজী জেবেল বলেন, ‘নীতিমালায় সাংবাদিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। সাংবাদিক বা ক্যামেরাপারসনের ওপর হামলা, হয়রানি বা নিপীড়নের ঘটনা ঘটলে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সংবাদ সংগ্রহে বাধা বা হামলার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ কী হবে, তা নীতিমালায় স্পষ্ট করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পরিচালনার জন্য সাংবাদিকরা যেন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন, তা অত্যন্ত জরুরি। যদি আমাদের প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা হয়, তবে নির্বাচনী খবরদারী আরও বিশ্বাসযোগ্য ও বস্তুনিষ্ঠ হবে।’

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos