শুল্ক নীতি নিয়ে শুনানিতে তীব্র প্রশ্নের মুখে ট্রাম্প

শুল্ক নীতি নিয়ে শুনানিতে তীব্র প্রশ্নের মুখে ট্রাম্প

অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপের বিষয়ে এক মামলায় সুপ্রিম কোর্টে মুখোমুখি হন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই মামলার ফলে তার নীতির ভবিষ্যত ও বিশ্ব অর্থনীতির ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুল্ক সম্প্রসারণের পক্ষে বা বিপক্ষে বিতর্কের মাঝে বিচারপতিরা বেশ কিছু তীক্ষ্ণ প্রশ্ন করেন, যা রাজনৈতিক ও আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। হোয়াইট হাউসের

অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপের বিষয়ে এক মামলায় সুপ্রিম কোর্টে মুখোমুখি হন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই মামলার ফলে তার নীতির ভবিষ্যত ও বিশ্ব অর্থনীতির ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুল্ক সম্প্রসারণের পক্ষে বা বিপক্ষে বিতর্কের মাঝে বিচারপতিরা বেশ কিছু তীক্ষ্ণ প্রশ্ন করেন, যা রাজনৈতিক ও আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

হোয়াইট হাউসের পক্ষে প্রকাশ্যে আসেন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট, বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক ও মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার। তারা আদালতকে বুঝিয়েছেন, যদি ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের অধিকারকে অকার্যকর করে দেওয়া হয়, তবে সরকারের হাতে থাকা বিপুল পরিমাণ অর্থ ফেরত দিতে হতে পারে, যা অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি করবে।

মামলাটি মূলত ১৯৭৭ সালের ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্স অ্যাক্টের ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে, যা জরুরি পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্টকে বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেয়। ট্রাম্প এই আইন ব্যবহার করে ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিল মাসে বহু দেশ থেকে পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেন, দাবি করেন যে, এসব দেশের পাচারকৃত মাদক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য জরুরি অবস্থা সৃষ্টি করেছে।

এর ফলে ট্রাম্পের এই আইনি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসা ও কিছু অঙ্গরাজ্য মামলা করেন। তারা অভিযোগ করেন, প্রেসিডেন্ট তার সাংবিধানিক ক্ষমতা অতিক্রম করে অপ্রয়োজনীয় শুল্ক আরোপ করেছেন, যা কাজের গণ্ডিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

আদালত সাধারণত এই ধরনের ব্যাপক মামলায় একাধিক মাসে সিদ্ধান্ত নেয়, তবে বেশ কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, এই মামলায় হয়তো দ্রুত রায় দেওয়া হবে কারণ এটি অনেকের কাছে ট্রাম্পের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এক বড় পরীক্ষা।

বিচারপতি অ্যামি কনি ব্যারেট এই শুনানিতে প্রশ্ন করেন, ‘আপনার কি মনে হয়, প্রতিটি দেশকেই প্রতিরক্ষা ও শিল্পের জন্য শুল্ক আরোপের হুমকি বিবেচনা করে এই নীতি নেওয়া হয়েছে? যেমন, স্পেন, ফ্রান্স?’ তিনি আরও জিজ্ঞেস করেন, ‘কিন্তু এতগুলো দেশের ওপর পারস্পরিক শুল্ক নীতি কেন প্রয়োগের দরকার পড়ল?’

আন্দোলনকারীরা বলছেন, এই শুল্কের ফলে বিলিয়ন ডলারের মতো অর্থ ঝুঁকিতে পড়তে পারে। যদি ট্রাম্পের এই আইনি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, সরকারকে বিশাল পরিমাণ অর্থ ফেরত দিতে হতে পারে, যা আর্থিক অস্থিতিশীলতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।

শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন হোয়াইট হাউসের বেশকিছু শীর্ষ কর্তৃপক্ষ, যারা ভবিষ্যতে বিকল্প পথ হিসেবে কাজ করবেন বলে আগাম ঘোষণা দেন। ক্যারোলিন লেভিট বলেন, ‘আমরা সবসময়ই পরিকল্পনা বি’র জন্য প্রস্তুত থাকি।’

প্রধানত ১৯৭৭ সালের আইইইপিএ আইনের আওতায় এই মামলাটি পরিচালিত হচ্ছে। এই আইন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট জরুরি অবস্থায় বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের জন্য শুল্ক আরোপের ক্ষমতা পান। ট্রাম্প এর আগে, ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিল মাসে, এই আইনের আওতায় চীন, মেক্সিকো, কানাডাসহ অন্যান্য দেশের উপর শুল্ক আরোপ করে তার ‘অপশন’ প্রকাশ করেন। এই শুল্ক আরোপের যুক্তি ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি খুবই বিপজ্জনক স্তরে পৌঁছে গেছে।

সর্বসাধারণের আক্রোশ ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ট্রাম্প অন্যান্য দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে চাপ দিচ্ছিলেন, যেখানে তার যুক্তি ছিল যে, এই শুল্কের মাধ্যমে তার দেশের অর্থনৈতিক ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা হবে। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, এই ধরনের শুল্ক আরোপ কেবল মার্কিনিদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos