সোনাইমুড়ী নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও অভিযোগ

সোনাইমুড়ী নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও অভিযোগ

সোনাইমুড়ী উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের নথিতে জানা গেছে, ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তাসলিমা আক্তার, যিনি নারায়ণগঞ্জের নাজিরপুর গ্রামের বাসিন্দা, গত ২৮ অক্টোবর সকাল ৯টার দিকে নিজের পিতার বাড়ি থেকে অনলাইনে ভোটার হতে আবেদন করেন। ওই দিন তিনি উপজেলা নির্বাচন অফিসে এসে ভোটার হতে আবেদন করার সময় নির্বাচন কর্মকর্তার রুমে প্রবেশ

সোনাইমুড়ী উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের নথিতে জানা গেছে, ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তাসলিমা আক্তার, যিনি নারায়ণগঞ্জের নাজিরপুর গ্রামের বাসিন্দা, গত ২৮ অক্টোবর সকাল ৯টার দিকে নিজের পিতার বাড়ি থেকে অনলাইনে ভোটার হতে আবেদন করেন। ওই দিন তিনি উপজেলা নির্বাচন অফিসে এসে ভোটার হতে আবেদন করার সময় নির্বাচন কর্মকর্তার রুমে প্রবেশ করেন। তখন ওই কর্মকর্তা আবু তালেব তাকে টাকা দাবি করেন। অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে ও তার বৃদ্ধ মা আলেয়া বেগমকে রুম থেকে বের করে দেওয়া হয়। পুনরায় প্রবেশের পর রেগে গিয়ে ওই কর্মকর্তা ভাষা ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। মা-মেয়ের অভিযোগ, পরে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ জানান।

আরেকটি অভিযোগে জানা যায়, উপজেলা পরিষদের ড্রাইভার মনির Hোসেন, যিনি বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়ি চালান, তার এক আত্মীয় ভোটার হতে আবেদন করতে গেলে জন্মনিবন্ধনে বয়সের ত্রুটি দেখিয়ে তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। অবশেষে, তিনি নিজেকে খানিকটা সরকারি কর্মচারী পরিচয় দিয়ে বিষয়টি সমাধান করতে গিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করা হয় বলে অভিযোগ করেন।

অপরদিকে, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের পিয়ন সালাউদ্দিন জানান, তার চাচাতো ভাই মাইনুল ইসলাম ভোটার হতে গেলে বয়সের ত্রুটি দেখিয়ে আবেদন বাতিল করেন ওই নির্বাচন কর্মকর্তা। পরে তিনি চুক্তির মাধ্যমে ২০ হাজার টাকায় ভোটার হওয়ার ব্যবস্থা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার বারগাঁও ইউনিয়নের পলাশ জানান, তার ফুফাতো ভাইয়ের নামের আগে মো. যোগের জন্য অনলাইনে আবেদন করলে নানা অজুহাতে সেটি বাতিল করে দেওয়া হয়।

সরকারি সূত্র ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে আবু তালেব নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই তার চরিত্রে নানাবিধ অনিয়ম, হয়রানি ও ঘুষের অজুহাতে দুর্নীতি বাড়তে শুরু করেছে। দাপ্তরিক কাজের জন্য থাকা দরজা বন্ধ থাকছে, জানালায় পর্দা টানা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরও সময়মতো সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না। সেটির কারণে অনেক নাগরিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ—পাসপোর্ট, চাকরি, জাতীয় পরিচয়পত্রের সংশোধন—মিস করছেন বা ভয় পাচ্ছেন। সরকারি হিসাবে দেখা গেছে, নতুন ভোটার তালিকা তৈরি, পরিচয়পত্রে ভুল সংশোধন ও ভোটার স্থানান্তর বিষয়ক সবকিছুতেই গোপনে bribery চালু হয়েছে। ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থেকে আসা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু তালেব যোগদানের পর থেকেই এসব অনিয়ম বেড়ে চলেছে। প্রবাসীরা যদি তাদের ভোটার আইডি সংশোধন করতে চাইলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করা হয় এবং মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করা হয়।

অন্তর্দ্বন্দ্বে ভরা এই পরিস্থিতিতে, উপজেলা পরিষদের এক কর্মচারী anonymously জানিয়েছেন, ভয় ও প্রতিশ্রুতির জাল বিঝিয়ে কার্যত কিছু আবেদনকারীর বয়সের অমিল থাকলেও আবেদন ড্রয়ারেই রেখে দেওয়া হয়, যার ফলে বহু মানুষ টাকার বিনিময়ে ভোটার হয়ে থাকেন। এছাড়া, ঠিকানা স্থানান্তর বা অন্য কোনও জরুরি কাজে দেরি হওয়ার জন্যও অভিযোগ উঠেছে। এসব বিষয়ের তদন্তের জন্য ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয় এবং ভুক্তভোগীরা বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হন। এর মধ্যে স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করেছেন যে, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এখনো এসব অনিয়ম বহাল থাকায় নির্বাচন স্বচ্ছতা নিয়ে ধোয়াশা তৈরি হয়েছে।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু তালেব জানান, তিনি এই জায়গায় যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলা করেছেন, তবে তিনি এ বিষয়ে কোনো অনিয়মের সত্যতা স্বীকার করেননি। অন্যদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আখতার অনুযায়ী, নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ থাকা সত্য, এবং আরও সতর্ক করা হয়েছে।

নোয়াখালীর সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘যদি কোনো প্রার্থী ভোটার হওয়ার জন্য অর্থ নেওয়ার সত্যতা প্রমাণ হয়, তাহলে saque ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ সবমিলিয়ে, এসব বিষয়ের তদন্ত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এখনো অপেক্ষা করছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos