সরিষাবাড়িতে মাছ ধরা ডারকি, চাঁই ও পলো হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্য

সরিষাবাড়িতে মাছ ধরা ডারকি, চাঁই ও পলো হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্য

বৃষ্টি হলে বা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খাল, বিল, নদী-নালায় শুরু হয় মাছ ধরার উৎসব। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়া ও অবৈধ কারেন্ট জালের কারণে গ্রামের ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেতের তৈরি মাছ ধরার উপকরণ যেমন ডারকি, চাঁই, পলো ও আনতা ক্রমশ হারিয়ে যেতে থাকছে। এই সূক্ষ্ম শিল্পের সাথে জড়িত সরেঙামানুষের জীবন খারাপের দিকে যাচ্ছে। গ্রামগঞ্জের

বৃষ্টি হলে বা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খাল, বিল, নদী-নালায় শুরু হয় মাছ ধরার উৎসব। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়া ও অবৈধ কারেন্ট জালের কারণে গ্রামের ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেতের তৈরি মাছ ধরার উপকরণ যেমন ডারকি, চাঁই, পলো ও আনতা ক্রমশ হারিয়ে যেতে থাকছে। এই সূক্ষ্ম শিল্পের সাথে জড়িত সরেঙামানুষের জীবন খারাপের দিকে যাচ্ছে। গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন হাটবাজারে এখন কম লক্ষ্য করা যায় বাঁশ ও বেতের তৈরি এসব পণ্য বিক্রির। বর্ষা ও বন্যার সময় এই সরঞ্জামগুলো গ্রামীণ জীবনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত থাকলেও, অবৈধ চায়না জালের ব্যবহার ও দাম বৃদ্ধির কারণে এই শিল্পের অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি। পাশাপাশি, ব্যাটারির মাধ্যমে অবৈধভাবে নদীতে কারেন্টের শক দিয়ে মাছ ধরা এখন বেশীরভাগ এলাকায় দেখা যায়, যা পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য অফিস নীরব ভুমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রবীণ কারিগর আফসার আলী, মোবারক হোসেন ও রোকসানা বেগম বলেন, এসব বাঁশ ও বেতের তৈরি মাছ ধরার ফাঁদগুলো মূলত খাল-বিল বা ডুবে যাওয়া কৃষি জমিতে ব্যবহার হয়, যেখানে শোল, শিং, কৈ, খইলসা, পুঁটি, চিংড়ি আরও অনেক দেশীয় মাছ সহজে ধরা যায়। এখন বড় আকারের চাঁই ও পলো তৈরি হচ্ছে, যার মাধ্যমে রুই-কাতল সহ বৃহৎ মাছও ধরা সম্ভব। এসব সরঞ্জাম আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

অন্যদিকে, সাধারণ কারিগররা বলেন, সেগুলো পূর্বে তাদের পরিবারের ঐতিহ্য ও পেশা ছিল। প্রায় ৪৫ বছর ধরে বাঁশ ও বেত দিয়ে মাছ ধরার চাঁই, পলো ও আনতা তৈরি করে আসছেন তারা। আগে প্রতি মৌসুমে হাজারো এই উপকরণ বিক্রি হতো, এতে অনেক শ্রমিক কাজ করত।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দেবযানী ভৌমিক জানান, চায়না জাল খুবই ক্ষতিকর কারণ এতে ছোট ছোট মাছ ও রেনু ধরা পড়ে যায়। তারা এর ব্যবহার বন্ধের জন্য কঠোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন স্থানে অভিযানের মাধ্যমে জাল বন্ধে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে এবং জাল পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। তবে, এই অবৈধ ব্যবসা এখনো পুরোপুরি বন্ধ হয়নি, এবং যথেষ্ট সতর্কতা ও উদ্যোগের অভাব দেখা যায়।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos