সেন্টমার্টিন ভ্রমণে ট্রাভেল পাস ও ১২ নির্দেশনা জারি

সেন্টমার্টিন ভ্রমণে ট্রাভেল পাস ও ১২ নির্দেশনা জারি

সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। দ্বীপে প্রবেশ ও ভ্রমণের জন্য এবার থেকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ট্রাভেল পাসের ব্যবস্থা। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দ্বীপের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং পর্যটনের অতিরিক্ত প্রভাব থেকে রক্ষা করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ-২ শাখা

সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। দ্বীপে প্রবেশ ও ভ্রমণের জন্য এবার থেকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ট্রাভেল পাসের ব্যবস্থা। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দ্বীপের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং পর্যটনের অতিরিক্ত প্রভাব থেকে রক্ষা করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২২ অক্টোবর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ-২ শাখা এ সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা প্রকাশ করে, যা ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নির্দেশিকা, ২০২৩’ এর আওতায় এসেছে। এর মধ্যে মোট ১২টি দিক নির্ধারিত হয়েছে, যা পর্যটনের নমনীয়তা ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রেখে দ্বীপের পরিবেশ সংরক্ষণে সহায়তা করবে।

নতুন নির্দেশনার মূল দিকগুলো হলো:

১. বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই কোনো নৌযান সেন্টমার্টিনে চলাচল করবে না।

২. পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অনুমোদিত ওয়েব পোর্টাল থেকে অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। প্রতিটি টিকিটে থাকবে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড, যা অপ্রামাণিক বা নকল হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৩. দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি ও পর্যটকের সংখ্যা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে, যাতে পরিবেশের উপর চাপ কম পড়ে।

৪. নভেম্বর মাসে শুধুমাত্র দিনের বেলা দ্বীপে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে; রাতে অবস্থান বা রাত্রিযাপন করতে পারবে না।

৫. ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে সীমিত আকারে রাত্রিযাপনের অনুমতি দেওয়া হবে, তবে তা নিয়ম অনুযায়ী পরিচালিত হবে।

৬. ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক প্রবেশ ও আচার-আচরণ বন্ধ থাকবে, অর্থাৎ পর্যটন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে না।

৭. প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক দ্বীপে প্রবেশ করতে পারবে না, যা পরিবেশের ক্ষতি রোধে সহায়ক।

৮. দ্বীপের পরিবেশ রক্ষার্থে রাতে সৈকত জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি ও বারবিকিউ পার্টির আয়োজন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

৯. কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্য ক্ষতি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

১০. সৈকতে মোটরসাইকেল বা অন্যান্য মোটরচালিত যানবাহন চলাচলও এই সময়ে নিষিদ্ধ।

১১. নিষিদ্ধ পলিথিন বহন ও একবার ব্যবহারের জন্য সামগ্রী— যেমন চিপসের প্যাকেট, স্ট্র, প্লাস্টিকের চামচ, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ছোট পানির বোতল— বহন বা ব্যবহার এড়ানো হয়েছে।

১২. পর্যটকদের নিজস্ব ফ্লাস্ক বা জল বোতল সঙ্গে রাখতে বলা হয়েছে, যাতে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো যায়।

পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিয়ন্ত্রণহীন পর্যটনের কারণে সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দ্বীপের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা ও পর্যটনের নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, দ্বীপে প্রবেশ ও অবস্থানসহ বিভিন্ন ধাপ এখন থেকে ডিজিটাল ট্রাভেল পাসের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হবে, যাতে সবকিছু স্বচ্ছ ও সুরক্ষিত থাকে।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos