বিশ্বের বিভিন্ন পারস্পরিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে দ্বিমত থাকলেও গাজা উপত্যকার যুদ্ধবিরতি নিয়ে রাশিয়া তার প্রতিযোগীদের থেকে আলাদা অবস্থান নিয়েছে। এবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনাটি এই মুহূর্তে গাজায় রক্তপাত বন্ধের জন্য সবচেয়ে কার্যকর। তিনি যোগ করেন, এটি আদর্শ নয়, কিন্তু বাস্তবসম্মত। ল্যাভরভের মতে, গাজায় স্থায়ী
বিশ্বের বিভিন্ন পারস্পরিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে দ্বিমত থাকলেও গাজা উপত্যকার যুদ্ধবিরতি নিয়ে রাশিয়া তার প্রতিযোগীদের থেকে আলাদা অবস্থান নিয়েছে। এবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনাটি এই মুহূর্তে গাজায় রক্তপাত বন্ধের জন্য সবচেয়ে কার্যকর। তিনি যোগ করেন, এটি আদর্শ নয়, কিন্তু বাস্তবসম্মত। ল্যাভরভের মতে, গাজায় স্থায়ী শান্তি ও যুদ্ধবিরতি চায় যদি ইসরায়েল, হামাস এবং মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো—যেমন যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার—রাশিয়ার কাছে সহযোগিতা চায়, তবে মস্কো সেই সহায়তার জন্য প্রস্তুত।
তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা বাস্তববাদী। পাশাপাশি দেখছি যে, বর্তমানে গাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় ট্রাম্পের পরিকল্পনাটি সেরা বিকল্প। এই বিষয়ে অন্য কিছু ভাবার অবকাশ নেই।’ ল্যাভরভ আরও বলেন, ‘তবে এই পরিকল্পনাটি পুরোপুরি আদর্শ নয় কারণ মূল সমস্যা হলো ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি। ট্রাম্পের প্রস্তাবে এই বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি, কেবল গাজার উপর ভিত্তি করে আলোচনা হয়েছে।’ তিনি বলছিলেন, ‘অথচ এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো গাজায় রক্তপাত বন্ধ করা। এজন্যই ট্রাম্পের পরিকল্পনাটি এত গুরুত্বপূর্ণ ও আশাব্যঞ্জক।’
গত ২৯ সেপ্টেম্বর সোমবার ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্প গাজার পরিস্থিতি নিয়ে নতুন একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। সেই সময় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার পাশে ছিলেন। ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, গাজায় যুদ্ধের অবসান ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এই পরিকল্পনা তার কাছ থেকে ইসরায়েল, হামাস ও ওই অঞ্চলের অন্যান্য মিত্র দেশ—মিসর ও কাতার—কে পাঠানো হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, হামাস ব্যতীত সবাই এই পরিকল্পনায় সম্মত হয়েছে।
অলটস্থ, ৩ অক্টোবর শুক্রবার হামাস এই পরিকল্পনা অনুমোদন দেয়। এরপর ৪ অক্টোবর ট্রাম্প ইসরায়েলকে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করার অনুরোধ জানান। ৬ অক্টোবর মিসরের শারম আল শেখ প্রান্তরে ইসরায়েল, হামাস, মিসর, যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার প্রতিনিধিরা বৈঠক করেন। এই বৈঠক চলাকালীন দুই দিনের বেশি সময় ধরে আলোচনা শেষে ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নের জন্য তারা চুক্তিতে পৌঁছেন এবং স্বাক্ষর করেন। ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এই বিষয়টি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, রাশিয়া শুরু থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। ২০২৩ সালে, গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের হামলার জবাব হিসেবে, ৮ অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। তখন রাশিয়া অন্যতম দেশ হিসেবে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায়। ১৬ অক্টোবর, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া প্রথমবার গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করে।