বর্ণিল সাজে কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ লেক, দর্শনার্থীদের ভিড়

বর্ণিল সাজে কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ লেক, দর্শনার্থীদের ভিড়

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ লেক এখন রঙিন আলো ও আধুনিক সাজে সজ্জিত। আগে যেখানে এই লেকটি ছিল কচুরীপানায় ভরা, নোংরা আবর্জনায় ভর্তি আর অব্যবস্থাপনার জন্য পরিত্যক্ত, আজ তা পুরোপুরি পাল্টে গেছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই লেকের সৌন্দর্য ও পরিবেশের উন্নয়নের ফলে এটি এখন একটি দৃষ্টিনন্দন বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ লেক এখন রঙিন আলো ও আধুনিক সাজে সজ্জিত। আগে যেখানে এই লেকটি ছিল কচুরীপানায় ভরা, নোংরা আবর্জনায় ভর্তি আর অব্যবস্থাপনার জন্য পরিত্যক্ত, আজ তা পুরোপুরি পাল্টে গেছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই লেকের সৌন্দর্য ও পরিবেশের উন্নয়নের ফলে এটি এখন একটি দৃষ্টিনন্দন বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাগুফতা হক এই লেকের সৌন্দর্যবর্ধন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার মো. মাসুম বিল্লাহ, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ, কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায়, কোটালীপাড়া থানার ওসি খন্দকার হাফিজুর রহমান, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আবু তাহের হেলালসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। উদ্বোধনের পর থেকেই লেকের চারদিকে ভিড় বাড়তে শুরু করে। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ, শিশুরা এখানে এসে বিনোদনের এই নতুন পরিবেশ উপভোগ করছেন। লেকের চারপাশে আধুনিক সুবিধাযুক্ত ফুটওয়াক তৈরি করা হয়েছে, যেখানে কেউ নির্বিঘ্নে হাঁটতে পারেন আর প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। বসার জন্য রঙিন টুলগুলো অন্ধকারে ঝলমল করে রাতের আলোয় এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ তৈরি করে। পাশাপাশি লেকের সড়ক সংস্কার করে হাঁটাচলার জন্য উপযোগী করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য লেকে মোট চারটি প্যাডেল বোট রাখা হয়েছে, যা শিশু-কিশোর ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রবিবার বিকেলে সরেজমিন দেখা গেল, লাইফ জ্যাকেট পরে দারুণ আগ্রহে লেকের প্যাডেল বোটে চড়ার জন্য দর্শনার্থীরা সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পরিবারের সঙ্গে বা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে অনেকেই এখানে আসছেন। রাতের আলো ও নরম বিকেলের রোদে, এই লেক যেন এক আনন্দের পার্কে রূপ নিয়েছে। স্থানীয় শিশু লাবিবা জানায়, এর আগে তারা ঘোরার জন্য ভালো কোনো জায়গা পেত না। এখন এই লেকের বোটে চড়ে তার ভালো লাগছে। বসার সুযোগ ও সুন্দর পরিবেশ দেওয়ায় বন্ধুরা মিলে নিয়মিত আসার পরিকল্পনা করছে। স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ‘কোটালীপাড়া কল্যাণ সংঘ’-এর সভাপতি সোহেল শেখ বলেন, একসময় এই লেকটি ছিল দুর্গন্ধময় নর্দমা ও মশার আখড়া। হাঁটুর ব্যথা ও রোগে আক্রান্ত রোগীদের দুর্ভোগের জন্য এই এলাকা ছিল দুঃখের বিষয়। অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার কারণে ধীরে ধীরে এই স্থানটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। তবে حالেই উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই লেকের অবস্থা পুরোপুরি বদলে গেছে। এখন এটি কোটালীপাড়াবাসীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে সংপৃক্ত হয়েছে, যেখানে সবাই নিশ্চিন্তে সময় কাটাতে পারেন। কোটালীপাড়া সরকারি আদর্শ কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক সমেন মজুমদার বলেন, প্যাডেল বোট পরিবেশবান্ধব, শান্তিপূর্ণ ও জলজ জীবনের জন্য ক্ষতিকর নয়। এটি পরিবার ও বন্ধুরা একসঙ্গে ঘুরে বেড়ানোর জন্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এই উদ্যোগ দীর্ঘদিনের প্রয়োজন ছিল, যারা এখন বাস্তবায়িত হয়েছে। সাহিত্যিক মিন্টু রায় বলেন, কোটালীপাড়া দক্ষিণ সীমান্তের মাচারতারা গ্রামে একটি শিশু পার্ক থাকলেও দূরত্ব ও যাতায়েতের কারণে অনেকের জন্য সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই এই লেক এখন বেশিরভাগ মানুষের কাছে কাছে পৌঁছে গিয়েছে। শিশু থেকে প্রবীণ—সবাই এখানে এসে সময় কাটায় এবং একসাথে আনন্দ উপভোগ করে। নির্বাহী অফিসার সাগুফতা হক জানিয়েছেন, এই লেকটি নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে। রঙিন লাইট লাগানো হবে, সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে নিরাপত্তার জন্য। পানির দূষণ রোধে খাবার ও প্যাকেটের আবর্জনা সরিয়ে রাখতে সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে। একাধিক ব্যক্তিকে বোর্ড চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যারা দায়িত্বে থাকবেন পানি পরিষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণে। এই উদ্যোগ শুধু লেকের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনেনি, বরং এটি স্থানীয় মানুষদের জন্য নতুন বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। শহরের ব্যস্ততা ও গ্রামীণ শান্তির এই মাঝখানে এই লেক এখন মানুষের মিলনমেলার স্থান। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও সচেতনতায় এই লেক দীর্ঘদিন ধরে বিনোদন ও সৌন্দর্যের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে থাকবে।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos