দুই সন্তানের স্বপ্নের জন্য কঠোর পরিশ্রমে এগিয়ে যাচ্ছেন চটপটির বিক্রেতা দীপক ও শম্পা

দুই সন্তানের স্বপ্নের জন্য কঠোর পরিশ্রমে এগিয়ে যাচ্ছেন চটপটির বিক্রেতা দীপক ও শম্পা

যশোরের মণিরামপুরের তাহেরপুর গ্রামে একটি সাধারণ চটপটি বিক্রেতার জীবনও এখন এক স্বপ্নের বাস্তবায়নের পথে। দীপক দাস ও তার স্ত্রী শম্পা দাসের দুই সন্তান—বড় ছেলে জয় দাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগে পড়ছেন, এবং ছোট মেয়ে জয়ন্তী দাস, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ (মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) প্রথম বর্ষে অধ্যয়ন করছেন। এই পরিবারটি তাদের অমিত সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে

যশোরের মণিরামপুরের তাহেরপুর গ্রামে একটি সাধারণ চটপটি বিক্রেতার জীবনও এখন এক স্বপ্নের বাস্তবায়নের পথে। দীপক দাস ও তার স্ত্রী শম্পা দাসের দুই সন্তান—বড় ছেলে জয় দাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগে পড়ছেন, এবং ছোট মেয়ে জয়ন্তী দাস, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ (মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) প্রথম বর্ষে অধ্যয়ন করছেন। এই পরিবারটি তাদের অমিত সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে চলেছেন, যেন তাদের সন্তানরা আরও উচ্চতর শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন সাজাতে পারে।

প্রথমে ছোট থেকেই এই দুই ভাই-বোনের মেধার স্বাক্ষর রয়েছে। পড়ালেখার খরচ চালাতে তারা দু’জনই এই হাড়ভাঙা পরিশ্রম করছেন। যেখানেই কোন জনসমাগম, মেলা বা ওয়াজ মাহফিল হয়, সেখানেই শম্পা দাসকে সঙ্গে নিয়ে দীপক চটপটি বিক্রি করেন। শহরের রাজগঞ্জ মোড়ের নতুন সেতুর পশ্চিম মাথায় দুপুরের পর থেকে নিয়মিত এই ব্যবসা চালান। ভাড়া বাড়িতে থেকে এই ছোট ব্যবসার মাধ্যমে সংসার চালানো, দু’সন্তানের পড়াশোনা শোধ করা—সবকিছুই তাদের জন্য কঠিন, তবে তারা হার মানেননি।

দিনের শুরুতেই রান্নার প্রস্তুতি শেষ করেন দীপক, দুপুরের পর ভ্যান নিয়ে পৌঁছে যান বিক্রির স্থানায়। রাতের বেলা সাড়ে নয়টা থেকে এগারোটা পর্যন্ত চলে এই ব্যবসা। স্ত্রীর গহনাগুলি বন্ধক রেখে এবং নানা ঋণ-সঞ্চয় করে ছেলেমেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেছেন। এর পরেও খরচের চাপ বেড়ে চলেছে।

দীপক দাস বলেন, তাঁর মন-মনন শুধু তাঁদের সন্তানের উন্নত ভবিষ্যত নিয়ে। তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্নই তাঁর সব some। ছেলে ও মেয়েকে আলাদা-বছরের জন্য একই শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়। মেয়েটি মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি (২০২১) ও এইচএসসি (২০২৩) পাশ করেছে। ছেলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাচ্ছে এবং একই সময়ে এসএসসি ও এইচএসসি পেরিয়ে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ে ও খুলনাবিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে।

শম্পা দাস প্রার্থনা করেন, তাদের সন্তানরা শুধু পড়ালেখায় নয়, ভাল মানুষ হিসেবেও গড়ে উঠুক।

বড় দিনের ছুটিতে বাড়িতে এসে বাঁধনেরিয়া মেয়ে জয়ন্তী ও ছেলে জয় দাস জানায়, ছোট থেকে দেখছেন তাঁদের বাবা-মা হাড়ভাঙা শ্রমে ঘামছেন। তাদের আত্মত্যাগের কাহিনী যেন কোনওদিন ভুলার নয়। ভবিষ্যতে তাঁদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য একান্তই প্রাণপণ চেষ্টা থাকবে।

এই পরিবারটির গল্প মানবিকতার এক অনুপ্রেরণামূলক গল্প, যেখানে স্বপ্ন দেখার সাহস ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তারা তাদের সন্তানদের জন্য আশির্বাদ হয়ে উঠছেন।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos