জনপ্রিয়তার শীর্ষে বিএনপি

জনপ্রিয়তার শীর্ষে বিএনপি

আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের জাতীয় নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে সরকার, ঠিক সেই সময় নির্বাচন কমিশনও প্রস্তুতি শুরু করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোও তৎপর হয়ে উঠেছে নিজেরা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য। এর পাশাপাশি ভোটারদের মনোভাব জানা ও জানা করার জন্য বেসরকারি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইনোভেশন কনসাল্টিং একজন জরিপ চালিয়েছে, যার নাম ‘পিপলস ইলেকশন পালস সার্ভে রাউন্ড টু’। এই

আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের জাতীয় নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে সরকার, ঠিক সেই সময় নির্বাচন কমিশনও প্রস্তুতি শুরু করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোও তৎপর হয়ে উঠেছে নিজেরা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য। এর পাশাপাশি ভোটারদের মনোভাব জানা ও জানা করার জন্য বেসরকারি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইনোভেশন কনসাল্টিং একজন জরিপ চালিয়েছে, যার নাম ‘পিপলস ইলেকশন পালস সার্ভে রাউন্ড টু’। এই জরিপের ফলাফল সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন ইনোভেশন কনসাল্টিংর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রুবাইয়াত সরওয়ার। তাদের জরিপে অংশ নিয়েছেন দেশের আটটি বিভাগের ৬৪টি জেলার মোট ৯,৩৯৮টি পরিবার বা খনার ১০,৪১৩ জন ভোটার।

জরিপের ফল বলছে, বেশির ভাগ ভোটার আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদের মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে বিএনপি। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভোটারদের মধ্যে ৪১.৩০ শতাংশ দলটিকে সমর্থন করেন। এর পরে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, যাদের সমর্থন রয়েছে ৩০.৩০ শতাংশ। গত বছর জনপ্রিয় গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরানো হওয়া আওয়ামী লীগ এখন তৃতীয় স্থানে, যার সমর্থন ১৮.৮ শতাংশ। এছাড়াও, নতুন পার্টি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পাচ্ছে ৪.১০ শতাংশ ভোটের সমর্থন।

ভোটাররা মনে করছেন, পরবর্তী সরকারের নেতৃত্ব দেবার সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে বিএনপির। তাদের মতে, ৪০ শতাংশ ভোটার বিশ্বাস করেন, বিএনপিই আগামী সরকার গঠন করবে। অন্যদিকে, ২৩.৩ শতাংশ ভোটার মনে করেন জামায়াত সরকারের দায়িত্ব নেবে, আর ১২.১ শতাংশ বিশ্বাস করেন আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। নতুন দল এনসিপির সরকার গঠনের সম্ভাবনা ধরে নিয়েছেন ৩.৮ শতাংশ ভোটার।

অন্য এক জরিপে দেখা গেছে যে, ৬৫.৫ শতাংশ ভোটার প্রার্থী বিবেচনায় ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত, যেখানে মাত্র ১৪.৭ শতাংশ ভোটার আলাদা প্রতীকে ভোট দিতে চান।

স্থানীয় রাজনীতির নেতাকর্মীদের কার্যক্রমে ভোটারদের সন্তুষ্টির হারও জরিপে উঠে এসেছে। দেখা গেছে, অন্যান্য দলের তুলনায় জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্থানীয় রাজনৈতিক কার্যক্রমে ভোটাদের বেশি সন্তুষ্টি রয়েছে। তরুণ প্রজন্ম এবং মহিলারা এতে আরও বেশি সন্তুষ্ট।

বিএনপি’র কার্যক্রমে সন্তুষ্ট ৮.২ শতাংশ ভোটার, জামায়াতের ১৩.৭ শতাংশ এবং এনসিপির কার্যক্রমে সন্তুষ্ট ৯.১ শতাংশ ভোটার।

জরিপে আরো দেখা গেছে, ৪৫.৫৮ শতাংশ ভোটার মনে করেন, আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনা না হওয়া পর্যন্ত তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন না। তবে, অন্যদিকে ৪৫.৭৯ শতাংশ ভোটার মনে করেন, সব রাজনৈতিক দলকেই আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত।

যদি ভবিষ্যৎ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ না দাঁড়ায়, তবে তাদের ভোটাধিকার প্রাপ্ত অনেক ভোটার অন্য দলগুলোকে ভোট দেওয়ার জন্য আগ্রহী। জরিপে পাওয়া গেছে, আওয়ামী লীগের ২০ শতাংশ ভোটার বিএনপি, ১৪.৮ শতাংশ জামায়াত, এবং ২.১ শতাংশ এনসিপিকে সমর্থন করতে ইচ্ছে করে।

সাধারণভাবে দেখা যায়, নির্বাচনে বিএনপিকে সমর্থন দেওয়ার হার বেশি, যেখানে ৩৯.১ শতাংশ ভোটার মনে করেন, বিএনপি অন্যতম যোগ্য দল। জামায়াতের পক্ষে আছেন ২৮.১ শতাংশ এবং এনসিপির সমর্থনে ৪.৯ শতাংশ ভোটার।

ভোটাররা আশা করেন যে, ভবিষ্যতের সরকারের কাছে পুলিশ সংস্কার, দুর্নীতি রোধ এবং আইনশৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি প্রত্যাশা করছেন। তবে বেশির ভাগ ভোটারই এখনো ভবিষ্যতের নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতার মধ্যে রয়েছেন। এই জরিপ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, জনধারার মনোভাব ও সামগ্রিক পরিস্থিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ছবি তুলে ধরেছে।

গত মার্চে পরিচালিত অন্য এক জরিপের মতো, সেপ্টেম্বরের জরিপেও দেখা গেছে, বিএনপির জনপ্রিয়তা প্রায় অচলাবস্থার মধ্যে থাকলেও, কিছু পয়েন্ট কমেছে। অন্যদিকে, শেখ আওয়ামী লীগ কিছু উন্নতি করেছে। বিএনপি দেশের ছয়টি বিভাগে এগিয়ে থাকলেও, জামায়াত রংপুরে এবং আওয়ামী লীগ বরিশালে শীর্ষে রয়েছে। এই সব তথ্য দেশের রাজনীতি ও নির্বাচনী প্রেক্ষাপটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos