২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড়ের মত শুরু হয়েছিল ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের উত্তেজনা ও সংঘর্ষ। সেদিন হামাসের হামলার মাধ্যমে গাজায় হামলার আগুন জ্বলতে শুরু করে, যা এখনো থামেনি। ২৩ মাসে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে নিহত হয়েছেন প্রায় ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক, যা একটি অন্ধকার অধ্যায় হিসেবে ইতিহাসে চিহ্নিত হবে। এই বিপর্যয়মূলক পরিস্থিতির মাঝে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কিছু চাঞ্চল্যকর
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড়ের মত শুরু হয়েছিল ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের উত্তেজনা ও সংঘর্ষ। সেদিন হামাসের হামলার মাধ্যমে গাজায় হামলার আগুন জ্বলতে শুরু করে, যা এখনো থামেনি। ২৩ মাসে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে নিহত হয়েছেন প্রায় ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক, যা একটি অন্ধকার অধ্যায় হিসেবে ইতিহাসে চিহ্নিত হবে। এই বিপর্যয়মূলক পরিস্থিতির মাঝে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে। জানা গেছে, গাজায় চলমান হামলার পর থেকে তাদের মোট প্রায় ২০ হাজারের বেশি সেনা আহত হয়েছেন, এর মধ্যে বেশিরভাগই মানসিক রোগে ভুগছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, আহত সেনাদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ পিটিএসডি(প্রোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার) ও অন্যান্য মানসিক সমস্যা নিয়ে রোগী হিসেবে চিকিৎসাধীন। এ পরিস্থিতি বোঝাতে গেলে দেখা যায়, আহত সেনাদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ শারীরিক আঘাতের পাশাপাশি মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত, আর প্রায় ২০ শতাংশ দুটোরই সম্মুখীন। এর মধ্যে রিজার্ভ সেনার সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। প্রতি মাসে গড়ে এক হাজারের বেশি আহত সেনার চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এই চিকিৎসার মধ্য দিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ৮১,৭০০ সেনাকে সাহায্য দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৩৮ শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা নিয়ে ভুগছেন। বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ২০২৮ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে এক লাখেরও বেশি হতে পারে, যেখানে আরও বেশি সেনা পিটিএসডি ও অন্যান্য মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এরই পাশাপাশি, এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাজেট ও মানবসম্পদ সংকটের কারণে বাস্তব চ্যালেঞ্জ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিটি ৭৫০ জন আহতের জন্য একজন করে পুনর্বাসনকর্মী কাজ করছেন, যা অপ্রতুল। অপর দিকে, নতুন কর্মী নিয়োগের জটিলতা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সমস্যা আরও বেড়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সম্প্রতি সরকার একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন ডাক্তার শ্লোমো মোর-ইয়োসেফ। তারা আহত ও মনোবিদ্যার বিকাশের জন্য দিকনির্দেশনা দেবেন, যাতে ভবিষ্যতে আহত সেনাদের জন্য যথাযথ সমাধান ও সহায়তা নিশ্চিত হয়। তবে এই সংঘর্ষের প্রভাব শুধু শরীরিক নয়, মানসিক স্বাস্থ্যেও ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে, যা ভবিষ্যতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সামরিক সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৯০৪ সেনা প্রাণ হারিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৩২৯ জন ৭ অক্টোবর নিহত হন এবং গাজার প্রবেশের পরে আরও ৪৬০ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া, হিজবুল্লাহর হামলায় ২৯ ও লেবাননের স্থল অভিযানে ৫১ সেনা শহীদ হয়। পশ্চিম তীর ও ইসরায়েলে আরও ২২ জন সেনা নিহত হয়েছেন। ইরাকের ড্রোন হামলা ও ইরান থেকে আসা ক্ষেপণাস্ত্রের ঘটনায় আরও ক’জন সেনা আহত ও নিহত হয়েছেন। এইসব ঘটনাই যুদ্ধের জোয়ারে ভাসছে ইসরায়েলের সেনারা, আর এই অস্থির পরিস্থিতি সামনের দিনগুলোতে আরও ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে পারে।











