রামগতিতে শিক্ষার দুরবস্থা ও শিক্ষকদের গ্রুপিং বিরোধী দুর্বৃত্তাচার

রামগতিতে শিক্ষার দুরবস্থা ও শিক্ষকদের গ্রুপিং বিরোধী দুর্বৃত্তাচার

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এখানে শিক্ষকরা কোচিং বাণিজ্য, ক্লাস ফাঁকি, শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি ও গ্রুপিং তৈরি করে নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন গঠন করে নেতার ভূমিকায় থেকে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে বিঘ্ন সৃষ্টি করছেন। এ সকল অসদাচার্য্য কারণে শিক্ষার পরিবেশ অস্থির হয়ে উঠেছে। মূলতঃ প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এখানে শিক্ষকরা কোচিং বাণিজ্য, ক্লাস ফাঁকি, শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি ও গ্রুপিং তৈরি করে নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন গঠন করে নেতার ভূমিকায় থেকে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে বিঘ্ন সৃষ্টি করছেন। এ সকল অসদাচার্য্য কারণে শিক্ষার পরিবেশ অস্থির হয়ে উঠেছে। মূলতঃ প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক সংগঠনের নেতারা প্রায়ই বিভিন্ন তদবিরের জন্য অফিসে ব্যস্ত থাকেন, ফলে ক্লাসের পরিবর্তে তারা অফিসে বা বাজারে ঘুরে বেড়ান। এর ফলে শিক্ষার মান কোনোভাবেই উন্নতি হয় না এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। অবিভাবকরাও তাদের সন্তানদের স্কুল থেকে সরিয়ে প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি করছেন।

জানা গেছে, রামগতি উপজেলার ৯৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে দুটি সংগঠনের নেতা রয়েছেন। প্রধান শিক্ষকদের সংগঠনের নেতৃত্ব দেন আলেকজান্ডার মডেল স্কুলের সেলিনা আক্তার ও বালুরচর স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন। অপর সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছেন বিবিরহাট স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবিএম ওসমান ও চরহাসান স্কুলের সোহেল সামাদ। সহকারী শিক্ষক সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আবু সায়েদ ও মোমিন উল্লাহ।

স্কুল চলাকালীন সময়ে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু সায়েদ স্বপন প্রায়ই দেখা যায়, তিনি নিজের মোটরসাইকেলের পেছনে বসে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করেন। শিক্ষক নেতা হওয়ায় তার জন্য স্কুলে উপস্থিত হতে হয় না। একই স্কুলের অন্য শিক্ষকরা খুবই কম সময়ে স্কুলে যান। এভাবেই বছর কাটছে এই অঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থার।

অপরদিকে, উপজেলার ১৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে রশিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুহিনা আক্তার নেতৃত্বে অবস্থিত উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারী সংগঠনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ওঠেছে। তারা সংগঠনের নামে প্রভাব বিস্তার করেন, শিক্ষকদের বেতন-ভাতা জোরপূর্বক নেওয়া, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ লুটপাট ও স্কুলের টাকা নিজের খাতে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও, তারা বেশিরভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করেন এবং খামখেয়ালি নিয়মে কর্মচারীদের বহিষ্কার করেন। এর বিরুদ্ধে কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ করেছেন।

সম্প্রতি, উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ বিষয়গুলি উচ্চারিত হয়। উপজেলা নিজস্ব পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুল হাসান জানিয়েছেন, শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং, দলাদলি, ক্লাস ফাঁকি ও প্রাইভেট কোচিং নিয়ে সমাজের নানান সমালোচনা চলছে। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, অধিকাংশ প্রধান শিক্ষক স্কুলে ক্লাস করেন না, সারাদিন অফিসে বা তদবিরে ব্যস্ত থাকেন। ফলে শিক্ষার্থীরা স্কুলের বাইরে নানা দোকানপাটে ঘোরাফেরা করছে। এসব অবস্থা বন্ধ করতে দ্রুত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

সবমিলিয়ে, রামগতির প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা বর্তমানে এক গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অসঙ্গতিগুলো অব্যাহত থাকায় শিক্ষকদের অদক্ষতা ও অদ্যুতিন কর্মকাণ্ড আরও বেড়ে চলেছে। এই অবস্থা ঠেকাতে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে শিক্ষার মান আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু সায়েদ স্বপন বলেছেন, তালিকা অনুযায়ী অচিরেই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ দিদার হোসেনের প্রতিজ্ঞা, কোচিংসহ শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং ও দলাদলি বন্ধে দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos