বাংলাদেশে গত তিন বছরে দারিদ্র্যের হার প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমানে ২৮ শতাংশে। ২০২২ সালে এই হার ছিল ১৮.৭ শতাংশ। এ ছাড়া, প্রায় ১৮ শতাংশ পরিবার দারিদ্র্যসীমায় নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে, এবং তারা যেকোনো মুহূর্তে সংকটের কারণে দারিদ্র্য অঞ্চলে প্রবেশ করতে পারে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এর এক গুরুত্বপূর্ণ
বাংলাদেশে গত তিন বছরে দারিদ্র্যের হার প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমানে ২৮ শতাংশে। ২০২২ সালে এই হার ছিল ১৮.৭ শতাংশ। এ ছাড়া, প্রায় ১৮ শতাংশ পরিবার দারিদ্র্যসীমায় নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে, এবং তারা যেকোনো মুহূর্তে সংকটের কারণে দারিদ্র্য অঞ্চলে প্রবেশ করতে পারে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এর এক গুরুত্বপূর্ণ গবেষণায় এই চিত্র উঠে এসেছে। এই গবেষণার শিরোনাম, ‘ইকনোমিক ডায়নামিকস অ্যান্ড মুড অ্যাট হাউজহোল্ড লেবেল ইন মিড ২০২৫’, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিইডি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ করা হয়। সংস্থার নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান এই গবেষণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন।
গবেষণা অনুযায়ী, এই বিচিত্র সংকটের মধ্যে রয়েছে কোভিড-১৯ মহামারি (২০২০-২০২২), মূল্যস্ফীতি এবং রাজনৈতিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা। গত বছরের আগস্টের পর থেকে দেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে সামান্য কিছু উন্নতি দেখা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের আগস্টের আগে ৮.৫৪ শতাংশ মানুষ ঘুষ দিতেন সরকারি সেবা নেওয়ার সময়। তবে আগস্টের পরে এই হার কমে ৩.৬৯ শতাংশে এসেছে। এখনো, সবচেয়ে বেশি ঘুষ দিতে হয় সরকারি অফিসে, এরপর পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের ফিস আদায়ে। পাশাপাশি, পরিবারের আয়ের মোট ৫৫ শতাংশ চলে যায় খাদ্য পণ্য কেনাকাটায়।
এছাড়া, নিম্ন ও মধ্যম শ্রেণির মানুষের দৈনন্দিন খরচ তাদের আয় থেকে বেশি হওয়ায়, তারা ধার-দেনায় জীবন নির্বাহ করছে। তবে উচ্চবিত্ত শ্রেণির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উন্নত থাকলেও আবর্তে বেড়েছে বৈষম্য ও হয়রানি। গত সরকারের আমলেও ঘুষের পরিমাণ ছিল ২১.৫১ শতাংশ, যা বর্তমানে বেড়ে ৩০.৭৯ শতাংশে পৌঁছেছে।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গড়তে হলে মানুষের জীবনযাত্রার অভিজ্ঞতা গুরুত্ব দিতে হবে, সেই অনুযায়ী নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সাধারণত অর্থনৈতিক ক্ষতির কথা আলোচনা হয়, কিন্তু জনগণের হয়রানি বা দুর্ভোগের বিষয়টি অনেকে অস্বীকার করেন। অথচ এই হয়রানি অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গতি কমিয়ে দেয়। করোনা ও অন্যান্য প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে, জনমুখী নীতি গ্রহণের মাধ্যমে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে আরও মনোযোগী হওয়া জরুরি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, একবার শুধুমাত্র জিডিপির উন্নয়নকে কেন্দ্র করে আলোচনা করা উচিত নয়, বরং সমস্যা সমাধানে সমতা, ন্যায়বিচার, বৈষম্যহীনতা ও নাগরিক কল্যাণের বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব হবে। তবে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও বেজথেকে অর্থনীতির পাশাপাশি সমাজের নানা অংশের উন্নয়নে মনোযোগী হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।