মাত্র ১২০ টাকা খরচে পুলিশে চাকরি পেয়ে নিজেদের স্বপ্নকে সত্যি করে দেখিয়েছেন জামালপুরের তরুণী জবেদা আক্তার। বাবাঃ-মায়ের আদর ও স্নেহ না পেয়ে জন্মগ্রহণের পর থেকেই নানা-নানীর কাছেই বেড়ে ওঠা জবেদা এখন নিজেকে সম্পূর্ণ স্বাধীনের পরিপূর্ণ মানুষ মনে করছেন। তিনি বলছেন, স্বপ্নের পুলিশ চাকরি পেয়ে আমার চোখের জল অশ্রু হিসেবে ঝরছে। জবেদা আক্তার বলেন, আমি বাবার
মাত্র ১২০ টাকা খরচে পুলিশে চাকরি পেয়ে নিজেদের স্বপ্নকে সত্যি করে দেখিয়েছেন জামালপুরের তরুণী জবেদা আক্তার। বাবাঃ-মায়ের আদর ও স্নেহ না পেয়ে জন্মগ্রহণের পর থেকেই নানা-নানীর কাছেই বেড়ে ওঠা জবেদা এখন নিজেকে সম্পূর্ণ স্বাধীনের পরিপূর্ণ মানুষ মনে করছেন। তিনি বলছেন, স্বপ্নের পুলিশ চাকরি পেয়ে আমার চোখের জল অশ্রু হিসেবে ঝরছে। জবেদা আক্তার বলেন, আমি বাবার আদর ও বিশ্বাস পেতে পারিনি, বাবার বিচ্ছেদে মা অন্যত্র বিয়ে করে আলাদা জীবন শুরু করেন। এভাবেই আমি নানা ও মামাদের সাহায্যে বড় হয়েছি, লেখাপড়া করেছি। প্রথমে কলাবাধা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করি, এরপর আলেয়া আজম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি কখনও ভাবিনি যে আমি সরকারি পুলিশ নিয়োগ পাব। চাকরির পরীক্ষা দিতে একাই পুলিশ লাইন্সে এসেছিলাম, আমার সাথে কেউ ছিল না। এখন সবাইকে ফোন করে জানাচ্ছি, মাত্র ১২০ টাকায় চাকরি পেয়েছি, এটি আমার জন্য বড় এক উল্লাসের বিষয়। এখন আমার আনন্দের সময় শুরু হচ্ছে বলে উচ্ছ্বাসের সাথে বলছিলেন জবেদা।শুধুমাত্র জবেদা আক্তারই নয়, জামালপুরে মোট ৩২ জন প্রার্থী এই স্বচ্ছ ও সহজ পথে পুলিশে চাকরি পেয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৯ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী। তদবীর বা লেনদেনের ছায়া ছাড়াই, শুধুমাত্র শরীরের যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে এই নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে পুলিশ লাইন্সের ড্রিল শেডে নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম।দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চেংটিমারী এলাকার মোঃ আবু তালেবের ছেলে মোঃ রুহেল মিয়া (১৯) কোরআনে হাফেজ। তিনি জানান, আগেই দুইবার পরীক্ষা দিয়েছিলেন, প্রতিবারই নিজের যোগ্যতায় উত্তীর্ণ হয়েছি। শেষবারের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে নি; এই সফলতা ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তার আরেক অভিজ্ঞতা হচ্ছে, তিনি গাজীপুরের জামিয়া ইবনে আব্বাস কওমী মাদ্রাসা থেকে হাফেজ হয়েছেন এবং বর্তমানে টঙ্গী সরকারি কলেজে ইসলাম শিক্ষা বিভাগে অনার্সে পড়াশোনা করছেন।ওই প্রত্যাশামাধ্যমে আরও অন্যান্য প্রার্থী উল্লেখ করেন, তারা কখনো ভাবেননি যে স্বচ্ছ ও সহজ এই পদ্ধতিতে পুলিশে চাকরি হবে। তারা মনে করেন, এই নিয়োগের জন্য অনেক তদবীর বা ঘুষের প্রয়োজন পড়ে—কিন্তু এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে স্বচ্ছ ও সরাসরি, যেখানে কোন দুর্নীতি বা লেনদেন হয়নি। পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বলেন, ২৪ জুলাই এবং ৫ আগস্টের পর দেশের সাধারণ মানুষের পুলিশ চাহিদা অনুসারে আমরা স্বচ্ছ ও যোগ্যতাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি। তিনি সবাইকে বলেন, অভিভাবকদের যেন তাদের সন্তানদের পুলিশে যোগ দানের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। এ বছর প্রায় ১ হাজার ৪০০ তরুণ-তরুণী আবেদন করেন, তার মধ্যে ৮০৩ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে ৭৩ জন মৌখিক পরীক্ষায় বসেন, আবার চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেওয়া হয় ৩২ জনকে। এই প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত ২৯ জন পুরুষ, ৩ জন নারী, এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ পেয়েছেন। এছাড়া কিছু প্রার্থী এখনও অপেক্ষায় রয়েছেন। সবাই এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও মেধার উপর ভিত্তি করে নির্বাচনের জন্য পুলিশের প্রশংসা করছেন।