রাশিয়া দাবি করেছে যে, তারা ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত পোকরোভস্ক শহরটি দখল করে নিয়েছে। এই শহরটি পূর্ব ইউক্রেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ লজিস্টিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত, যেখানে সামরিক ও পরিবহন কার্যক্রমের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিনের কঠিন লড়াইয়ের পর রুশ সেনারা এই শহরটি নিজেদের দখলে নিয়েছে বলে দাবি করা হয়। কাতার ভিত্তিক সংবাদ-মাধ্যম আল জাজিরার খবরে
রাশিয়া দাবি করেছে যে, তারা ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত পোকরোভস্ক শহরটি দখল করে নিয়েছে। এই শহরটি পূর্ব ইউক্রেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ লজিস্টিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত, যেখানে সামরিক ও পরিবহন কার্যক্রমের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিনের কঠিন লড়াইয়ের পর রুশ সেনারা এই শহরটি নিজেদের দখলে নিয়েছে বলে দাবি করা হয়।
কাতার ভিত্তিক সংবাদ-মাধ্যম আল জাজিরার খবরে জানানো হয়েছে, রাশিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা পূর্ব ইউক্রেনের এই গুরুত্বপূর্ণ শহরটিকে দখল করে নিয়েছে। প্রায় দুই বছর ধরে অবরুদ্ধ থাকা এই শহরটি রোববার রাতে রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আসে বলে দাবি করা হয়েছে।
সোমবার ক্রেমলিনের এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়। রুশ সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, Kharkiv-এর ভভচানস্ক শহরটিও রুশ বাহিনী দখল করেছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, পুতিন রোববার রাতে তাঁর ফ্রন্টলাইনের কমান্ড সেন্টার পরিদর্শনকালে পोकরোভস্ক দখলের খবর পান। এই শহরটি ডোনেৎস্ক জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন কেন্দ্র। রুশ দাবি, এই চারটি অঞ্চল – ডনবাস, লুHANস্ক, লেগানস্ক ও খারকিভ অঞ্চলের বিভিন্ন অংশ নিজস্ব দখলে নিয়েছে রাশিয়া।
ছোট শহরটি আগে ছিল প্রায় ৬০ হাজার মানুষের বাসস্থল যেখানে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রুশ ড্রোন, গোলাবর্ষণ ও বোমা হামলার কারণে ব্যাপক ধ্বংস ঘটেছে। শহরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইউক্রেন এই দখল স্বীকার করেনি, তবে রয়টার্স জানিয়েছে, রুশ বাহিনী পোকরোভস্কের রাস্তায় সৈন্যদের মার্চপাস্ট ও রুশ পতাকা ওড়ানোর ভিডিও প্রকাশ করেছে।
তাসের খবরে বলা হয়েছে, পরে পুতিন রুশ বাহিনীকে এই সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। পুতিন বলেন, ‘ক্রাসনোআর্মেইস্কের এই অভিযানের ফলাফলের জন্য আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। অবশ্যই, আমাদের যোদ্ধারা, যারা এসব কাজ পরিচালনা করছে।’
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন, যেখানে ভবিষ্যৎ সমাধানের পথ ও যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা হবে। তিনি বলেন, রাশিয়ার দখলদারিত্বকে বৈধতা দেওয়া কোনোভাবেই स्वीकार্য নয়; ইউক্রেনের অখণ্ডতা রক্ষা করাই মূল অগ্রাধিকার।
জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়াকে কোনোভাবেই আমাদের ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হবে না। এটি আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’ ইউক্রেনের এই অবস্থান নিয়ে আলোচনা চলছে, যেখানে ইউরোপ ও মার্কিন মিত্ররা এই পরিস্থিতি সমাধানে উৎসাহী।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ভূখণ্ডে রুশ দখলদারিকে বৈধতা দেবো না। এর জন্য আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কঠোর থাকব।’
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আক্রমণ শুরু করে। এই যুদ্ধের অবসান নিয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনাও জোরদার হয়েছে। প্যারিসে ইউরোপীয় ও মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন জেলেনস্কি। তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে ফোনালাপ করেন।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে আলোচনায় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছি।’ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মারকোঁর সঙ্গে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব আমাদের অগ্রাধিকার। অক্ষত রাখতে হবে আমাদের ভৌগোলিক অখণ্ডতা।’
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিও শান্তির জন্য ইউরোপ ও মার্কিন সহযোগিতার গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, ভবিষ্যত আলোচনায় রাশিয়াও কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
অন্যদিকে, মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ ও ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জেলেনস্কি বলেন, এই বৈঠকের পর তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে আলাপ করবেন। তবে, কিয়েভ স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তারা কোনোভাবেই ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে সমঝোতা মানবে না।
উপদেষ্টা রুস্তেম উমেরভ আল-জাজিরাকে বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি, রাশিয়া আমাদের ভূখণ্ড দখল করে রেখে সেটিকে বৈধতা দেওয়ার দাবি কখনো মান্য হবে না। এই ধরনের কোনো সমঝোতা চলতে পারে না।’
আন্তর্জাতিক মহল এই যুদ্ধ বন্ধের অঙ্গীকার নিয়ে আলোচনাও চলমান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এটি ইউরোপের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বলে মনে করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দূতরা মনোযোগী হচ্ছেন পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের জন্য, যেখানে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ ঘোষণা হতে পারে।











