পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দল সেটি ইমরান খান এখন এক নিঃসঙ্গ ও কঠিন বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন। এমন অভিযোগ তুলে তার ছেলে কাসিম খান জানান, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও ইমরানের পরিবারের সদস্যরা বা তার আইনজীবীরা তার সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না, এমনকি তাঁর জীবিত থাকারও নিশ্চিত দাবী পাওয়া যাচ্ছে না। লন্ডনে বসবাসরত কাসিম বলেন, তাঁর বাবা দীর্ঘ সময়
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দল সেটি ইমরান খান এখন এক নিঃসঙ্গ ও কঠিন বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন। এমন অভিযোগ তুলে তার ছেলে কাসিম খান জানান, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও ইমরানের পরিবারের সদস্যরা বা তার আইনজীবীরা তার সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না, এমনকি তাঁর জীবিত থাকারও নিশ্চিত দাবী পাওয়া যাচ্ছে না।
লন্ডনে বসবাসরত কাসিম বলেন, তাঁর বাবা দীর্ঘ সময় ধরে বন্দি রয়েছেন এক অন্ধকার, জানালা-পরিহীত ও বায়ুচলাচলহীন কক্ষে। সেখানে ফোনকল বা সাক্ষাৎ করার কোনো ব্যবস্থা নেই, এমনকি চিকিৎসকের কাছেও যাওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফকে জানান, ইমরান খানকে দিনে ২২ ঘণ্টা একটি ডেথ সেলে বন্দি রাখা হচ্ছে। চিকিৎসকদের দেখা করার অনুমতি নেই, ছয় মাসের অধিক সময় ধরে পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলার কোনও সুযোগ নেই। এই পরিস্থিতি মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত এক মানসিক নির্যাতন, যা এক দিক থেকে নিছক নিষ্ঠুরতা বলে মনে করেন তিনি।
তার তিন বোন নুরিন খান, আলীমা খান ও উজমা খান এবং পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতারা রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তারা ইমরানের দ্রুত সুস্থতার জন্য প্রমাণ দেখানোর ও সাক্ষাৎ অনুমোদনের দাবি জানিয়ে আসছেন। পাশাপাশি, কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগও দাখিল করা হয়।
পরিবারের অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও সাক্ষাৎকারের আবেদন গড়িমসি করে প্রত্যাখ্যান করছে কর্তৃপক্ষ। কখনো সরাসরি জানানো হয়, সাক্ষাৎ দেওয়া সম্ভব নয়।
এদিকে, কারাগার থেকে ইমরানের বোনরা প্রতিবাদে গেলে পুলিশ তাদের রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং ধাক্কাধাক্কির অভিযোগ ওঠে।
গত সপ্তাহে পাকিস্তানে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, হেফাজতে থাকা অবস্থায় ইমরান খান মারা গেছেন, তবে সরকার ও পিটিআই চলমান এই অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির সত্যতা অস্বীকার করে।
কাসিম সতর্ক করে বলেন, বাবার নিরাপত্তা ও এই মানবেতর বন্দিজীবনের জন্য পাকিস্তান সরকারকে সম্পূর্ণ দায়ী থাকতে হবে। এখন তিনি ১৪ বছরকার কারাদণ্ড ভোগ করছেন। অভিযোগ, তিনি ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি ক্ষমতায় থাকাকালীন আল-কাদির ট্রাস্টের নামে একটি রিয়েল এষ্টেট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে জমি গ্রহণ করেছিলেন। তবে তারা উভয়ই এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সেই জমি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্য দেওয়া হয়েছিল।
কাসিম বলেন, দুর্নীতি নিয়ে কথা বললে পাকিস্তানের অনেকেই জেলে থাকতে পারেন। তবে ইমরান খানকে টার্গেট করা হয়েছে কারণ তিনি পরিবর্তনের প্রতীক, জাতির সম্মিলিত সমর্থন পেয়েছেন এবং সামরিক বাহিনী সমালোচনা করেছেন। লাখো মানুষ তাকে সমর্থন দিয়েছে।
২০২৪ সালে জাতিসংঘের ইচ্ছাকৃত আটকবিরোধী বিভাগের (ইউএনডব্লিউজিএডি) এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইমরান খানের আটক কোনোভাবেই রাজনীতির উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা আইনি ভিত্তিহীন নয়।
কাসিম খান জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী বিশেষ প্রতিবেদক ড. অ্যালিস এডওয়ার্ডসের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন, যেন এই নির্মম ও অমানবিক আচরণ অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি করা হয়।











