মির্জা ফখরুলের অঙ্গীকার: স্বাধীন ও সম্পূর্ণ গণমাধ্যমের জন্য বিএনপির দৃঢ় প্রত্যয়

মির্জা ফখরুলের অঙ্গীকার: স্বাধীন ও সম্পূর্ণ গণমাধ্যমের জন্য বিএনপির দৃঢ় প্রত্যয়

বিএনপি স্বাধীন ও সার্বভৌম গণমাধ্যমের নির্মাণ ও উন্নয়নে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) কর্তৃক আয়োজিত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট ও পরিষ্কার—আমরা চান একটি

বিএনপি স্বাধীন ও সার্বভৌম গণমাধ্যমের নির্মাণ ও উন্নয়নে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) কর্তৃক আয়োজিত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট ও পরিষ্কার—আমরা চান একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যম। আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ চালিয়ে যাব। বিএনপি’র ৩১ দফা মূল্যবোধে আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছি যে, মানসম্মত, মুক্ত ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠা আমাদের অগ্রাধিকার।

তিনি আরও বলেন, সরকার গঠনের ক্ষেত্রে গণমাধ্যম সংস্কারে একটি কমিশন তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে বিএনপি কাজ করছিল। ইতোমধ্যে সেই সংস্থা চালু হয়েছে, তবে এর প্রতিবেদন তৈরি হওয়ার পরেও কোন আলোচনা বা বাস্তবায়ন শুরু হয়নি। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, যদি বিএনপি নির্বাচনে সরকার গঠন করে, তাহলে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মান্য করে পরিস্থিতি বদলানোর প্রবণতা শুরু হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, যদি সংস্কার শুধুমাত্র হৃদয়ে না ঢোকে, মনের অঙ্গীকার না হয় এবং পরিবর্তনের ইচ্ছা না থাকে, তাহলে সেখানে কি ধরনের অগ্রগতি সম্ভব তা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে উঠে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করে বাকশাল গঠন করা হয়েছিল। সব পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল, সরাসরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল চারটি পত্রিকা। তবে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বেশ কিছু স্বাধীন পত্রিকা চালু হয়েছিল, যা গণমাধ্যমের মুক্তির জন্য এক ধরনের স্বপ্ন ছিল। এরপর বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসে, তখনও গণমাধ্যমের স্বার্থে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে অনেক সাংবাদিক নিজস্ব ইউনিয়ন গড়ে তুলেছেন, তবে কিছু দলীয় ও নেতৃত্বাধীন গ্রুপও রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের পকেটভর্তি করতে চাইছে, যা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে কিছু সাংবাদিক নিজ উদ্যোগে ফ্যাসিবাদী শাসনকে সমর্থন করেছেন, যা উদ্বেগের কারণ। তিনি সতর্ক করে দেন, সাংবাদিকরাও এক অঙ্গীকারে আবদ্ধ হবার প্রয়োজন, যাতে তারা স্বাধীন সাংবাদিকতা চালিয়ে যেতে পারেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক। প্রতিনিধি দলের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ, গণ-অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতনসহ আরও অনেক নেতা-কর্মী অংশ নেন।

বিজেসি উদ্বেগ প্রকাশ করে, গণমাধ্যম কমিশনের সুপারিশ ও সাংবাদিকদের জন্য প্রস্তাবিত পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়ন তো হয়ে উঠছে না, যা সংশ্লিষ্টদের জন্য খুবই চিন্তার বিষয়। তারা মনে করেন, এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডগুলো সবাই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে এবং দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রতিশ্রুতি দেবে।

তদ্ব্যতীত, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ও দেশি-বিদেশি সংগঠনের প্রতিনিধিরা, যারা গণমাধ্যমের উন্নয়নে একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos