দু’পা হারিয়েও কখনো হাল ছাড়েননি ঠান্ডু মিয়া

দু’পা হারিয়েও কখনো হাল ছাড়েননি ঠান্ডু মিয়া

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার জুগিরগোফা স্কুলপাড়া এলাকার মৃত ইসমাইলের ছেলে ঠান্ডু মিয়া নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবনযাপন করে চলেছেন, কারো কাছে হাত পেতে নয়। জীবনের সংগ্রামের এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন এই মানুষটি, যিনি দু’পা হারিয়েও কখনো হার মানেননি। ২০০০ সালে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় তার ডান পা অকেজো হয়ে যায়। কিন্তু এর পরও তিনি থামেননি, জীবনের

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার জুগিরগোফা স্কুলপাড়া এলাকার মৃত ইসমাইলের ছেলে ঠান্ডু মিয়া নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবনযাপন করে চলেছেন, কারো কাছে হাত পেতে নয়। জীবনের সংগ্রামের এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন এই মানুষটি, যিনি দু’পা হারিয়েও কখনো হার মানেননি।

২০০০ সালে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় তার ডান পা অকেজো হয়ে যায়। কিন্তু এর পরও তিনি থামেননি, জীবনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে, তা স্বীকার করেই এগোতে থাকেন। এক বছর ধরে চলতে থাকে তার চিকিৎসা। এরপর আসে COVID-19 মহামারি, যা তার জন্য আরও বড় বিপদ ডেকে আনে। চিকিৎসার অভাবে তার অন্যান্য পা’er সংক্রমণ দেখা দেয়, শেষমেশ ২০২৪ সালে সেই পা-ও কেটে ফেলতে হয়। এরপর একজন পরিশ্রমী কৃষক হিসেবে হঠাৎই তার জীবন অতিকষ্টে পরিণত হয়, তিনি হয়ে যান কর্মহীন ও অসহায়।

সেই পরিস্থিতিতে নিজ হাতে তৈরি করেন বিশেষ ধরনের ভ্যান, যা এখন তার জীবনের একমাত্র জীবিকা। প্রতিদিন সকালে তিনি বাদাম নিয়ে বাজারে যান— গাংনী, বামন্দী, আলমডাঙ্গা কিংবা হাটবোয়ালিয়া— যেখানেই যান, সঙ্গে থাকেন তার জীবনপ্রেরণার এক অনন্য উদ্যম। প্রতিদিন বাদাম বিক্রি করে তিনি ৭ থেকে ৮০০ টাকার মতো আয় করেন, এর থেকে প্রাপ্ত অর্থে চলে পরিবারের নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ।

ঠান্ডু মিয়া বলেন, “দুই পা নেই… কিন্তু আমি কারো কাছে হাত পাতা চাই না। আমি শুধুমাত্র নিজের পরিশ্রমেই চলছি। আল্লাহ যা দেন, সেইটিই খাই।”

তার স্ত্রী শাহানারা খাতুন বলেন, “একসময় আমাদের পরিবার খুব ভালো চলত। চাষাবাদ ও মুনিশপাট খেতে বেশ সুবিধা ছিল। কিন্তু স্বামীর দুর্ঘটনায় সবকিছু পাল্টে গেছে। এখন আমি নিজে বাদাম ভেজে বিক্রি করি, সেই টাকা দিয়েই সংসার চলে। আমরা চেষ্টা করি, কোনওভাবে জীবনটা চালিয়ে যেতে।”

স্কুলের শিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, “মানুষটার মনটা অনেক বড়। ও কারো কাছে কিছু চায় না, নিজের শ্রমে চলতে চেষ্টা করে। আমরা কিছু সাহায্য করার চেষ্টা করি, তার জন্য বাদাম কিনে। দু’পা না থাকলেও ওর মনোবল অটুট। এটা তার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।”

তাদের এই সংগ্রাম ও সাহসের গল্প আমাদের জন্য অন্যতম প্রেরণার स्रोत। যিনি হার মানেননি, তিনি প্রমাণ করেছেন, সত্যিই কিছু করতে চাইলেই সম্ভব।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos