বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য তিনটি মূল চ্যালেঞ্জ: রাজস্ব, বিনিয়োগ ও মূল্যস্ফীতি

বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য তিনটি মূল চ্যালেঞ্জ: রাজস্ব, বিনিয়োগ ও মূল্যস্ফীতি

দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ লক্ষণীয়—বিনিয়োগে পতন, ঋণ সংকোচন এবং উচ্চ সুদের হার। এই চ্যালেঞ্জগুলো অর্থনৈতিক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে, তবে সাম্প্রতিক সময়ের উন্নতি ও সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) মােসিক ইকনোমিক আপডেট প্রতিবেদনে এসব তথ্য বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যা মঙ্গলবার প্রকাশ করা

দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ লক্ষণীয়—বিনিয়োগে পতন, ঋণ সংকোচন এবং উচ্চ সুদের হার। এই চ্যালেঞ্জগুলো অর্থনৈতিক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে, তবে সাম্প্রতিক সময়ের উন্নতি ও সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) মােসিক ইকনোমিক আপডেট প্রতিবেদনে এসব তথ্য বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যা মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমে এসেছে, যার ফলে আমানত প্রবৃদ্ধিও পুনরুদ্ধার হয়েছে। সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সংস্কারমূলক উদ্যোগ, যেমন জাতীয় সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানো, ডিজিটাল অর্থনৈতিক পরিষেবাগুলোর উন্নয়ন, এবং সরকারি অর্থের ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ—এসসব পদক্ষেপ আমানত বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এছাড়াও, প্রবাসী আয় শক্তিশালী থাকায় অর্থনীতির ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। আগামী নির্বাচন সময়কালে বিভিন্ন কার্যক্রম অর্থনীতিতে গতি আনবে এবং বিনিয়োগকারীদের মনোভাবো বেশ উজ্জীবিত করবে বলে দেখানো হয়েছে।

অক্টোবরে, মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়ে ৮.৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা আগস্টে ছিল ৮.২৯ শতাংশ। খাদ্য ও এর বহির্ভূত খাতের মূল্যবৃদ্ধির এই প্রবণতা একই রকম থাকলেও, এর কিছুটা র্ল্যাক্স হয়েছে। খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে চালের দাম কমলেও, আলু ও পেঁয়াজের দর মানুষের জীবনযাত্রায় স্বস্তি এনেছে। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সরকার ভারতের কাছ থেকে ৫০ হাজার টন চাল এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২২০ পরিবহন গম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে; আশা করা হচ্ছে নভেম্বরের মধ্যে আরও ৪ লাখ টন খাদ্যশস্য দেশে আসবে। এ বছর সরকারি খাদ্যশস্যের বিতরণ আগের তুলনায় ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে মজুত এখনও ১৫ লাখ টন ছাড়িয়ে গেছে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। মার্চের ২৫.৫ বিলিয়ন ডলার থেকে সেপ্টেম্বরে এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১.৪ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া, রপ্তানি আয় একটানা কমে গেলেও মূল ধাতু খাতগুলো—পাটজাত পণ্য, চামড়া ও হালকা প্রকৌশল—স্থিতিশীল অবস্থানে আছে। আগামী বছর চালিয়ে যাওয়া মূল রপ্তানি খাতগুলো প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অর্থনৈতিক সূচকের মধ্যে, নির্দিষ্ট সময়ে টাকার বিনিময় হার মার্কিন ডলারের তুলনায় স্থিতিশীল থাকলেও, রিয়েল বা ইকনোমিক রেট কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যাংকিংখাতে আমানত ও রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আমানত বেড়ে চলেছে ১০ শতাংশের বেশি, এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক বছরের মধ্যে ২১ শতাংশ বেশি রাজস্ব সংগ্রহ করেছে। এই সময়ে, ভ্যাট ও আয়কর আদায় অনেক বেশি ছিল, তবে শুল্ক রাজস্ব কিছুটা কমে গেছে। প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়াতে এনবিআর নতুন বিভিন্ন পদ সৃষ্টি ও নতুন কারিগরি ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছে, ফলে রাজস্ব সংগ্রহ আরও জোরদার হবে বলে প্রত্যাশা।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos