যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ৪০ শতাংশ কমে গেছে

যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ৪০ শতাংশ কমে গেছে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পণ্য রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে এই রপ্তানি ২০ শতাংশ করে কমে গেছে, এবং গত চার মাসে হারটি প্রায় ৪০ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে, এমনটাই জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ভারত সরকারের তথ্যমতে, ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়া নতুন শুল্ক কাঠামোর

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পণ্য রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে এই রপ্তানি ২০ শতাংশ করে কমে গেছে, এবং গত চার মাসে হারটি প্রায় ৪০ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে, এমনটাই জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ভারত সরকারের তথ্যমতে, ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়া নতুন শুল্ক কাঠামোর পুরোপুরি প্রভাব পড়েছে সেপ্টেম্বর মাসে। এই শুল্কের মধ্যে রয়েছে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধে ভারতের অস্বীকৃতির কারণে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ জরিমানাও।

দিল্লিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) সহ-প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব জানান, শুল্ক বৃদ্ধির পরে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের বাজারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শ্রমনির্ভর খাতগুলো—যেমন বস্ত্র, রত্ন ও গয়না, প্রকৌশলজাত পণ্য, এবং রাসায়নিক—বিশেষ করে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব খাতে রফতানি আয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ কমে গেছে।

মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ছিল ৮.৮ বিলিয়ন ডলার। তবে সেপ্টেম্বর নাগাদ তা কমে ৫.৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, অর্থাৎ প্রায় ৩৭.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। চার মাস ধরে রপ্তানি কমতির কারণে ভারতের মোট বাণিজ্য ঘাটতিও বেড়েছে, যা সেপ্টেম্বরে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩২.১৫ বিলিয়ন ডলার—এটি গত ১৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

তবে, কিছুটা ভারসাম্য রক্ষায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য বৃদ্ধিও লক্ষণীয়।

ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আবার নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এই আলোচনা চলমান থাকায় আশাবাদ जतানো হচ্ছে যে, আসন্ন মাসে একটি প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হতে পারে। এদিকে, একটি ভারতীয় প্রতিনিধি দল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছে।

বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনা বন্ধ করবে। ওয়াশিংটন মনে করছে, এর মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধের ওপর চাপ বাড়ানো সম্ভব হবে।

অন্যদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য আলোচনা চলছে, এবং বর্তমান মার্কিন প্রশাসন এই বিষয়টি আরও গভীর করতে আগ্রহী।

তবে, কৃষি ও দুগ্ধ খাতের বাজার প্রবেশাধিকার নিয়ে এখনও বড় ধরনের মতপার্থক্য থাকছে। ওয়াশিংটন ভারতের কৃষি খাতকে সম্ভাবনার বাজার হিসেবে দেখলেও, নয়াদিল্লি খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষকের জীবনযাত্রা, ও অভ্যন্তরীণ বাজার রক্ষার স্বার্থে এই খাতকে রক্ষা করে আসছে।

এক সময় যুক্তরাষ্ট্র ছিল ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। ২০২৪ সালে দুই দেশের পারস্পরিক বাণিজ্য ছিল অবশিষ্ট ১৯০ বিলিয়ন ডলার। ট্রাম্প ও মোদি দুইই এই অঙ্ক ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক শুল্কের ব্যাপকতা সেই লক্ষ্যমাত্রাকে এখন গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos