জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আহত ও শহীদ পরিবারের প্রতি সম্মান দেখানো হয়নি তা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, এই অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারদের যথাযথ সম্মাননা না দিয়ে বরং তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন। আখতার হোসেন
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আহত ও শহীদ পরিবারের প্রতি সম্মান দেখানো হয়নি তা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, এই অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারদের যথাযথ সম্মাননা না দিয়ে বরং তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন।
আখতার হোসেন জানান, শহীদ পরিবারেরাই মূলত খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল এই অনুষ্ঠানের আয়োজনের ক্ষেত্রে, তবে তাদের মঞ্চের কাছ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং অমর্যাদা করা হয়। আহতদের ওপর হামলা চালিয়ে এবং তাদের অসম্মান করে, এই ‘জুলাই সনদ’কে একজন শক্তিশালী রাজনৈতিক গোষ্ঠীর স্বার্থের জন্য ব্যবহারের চেষ্টাও করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, শুক্রবার এই ঘটনার জন্য কিছু দাবি নিয়ে শহীদ পরিবার ও আহতরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে অঙ্গীকারের পঞ্চম ধাপে ‘জুলাই সনদ’ সংশোধনের ঘোষণা দিয়ে ঐক্যবদ্ধ কমিশন বলেছে, তবে শুরুতেই যদি এই বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হতো, তাহলে পরিস্থিতি এতটা জটিল হত না।
আখতার হোসেন আরও অভিযোগ করেন, সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান না করে আহত ও শহীদ পরিবারদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এই পরিস্থিতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এই ঘটনার অধিক তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় বিচার দাবি তারা করেন।
তিনি আরও বলেন, এই ‘জুলাই সনদ’ সম্পর্ণভাবে বৈধ এবং আইনী ভিত্তি না থাকলে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন একটি ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে হয়। প্রথমত, এই সনদ নিয়ে যথাযথ স্পষ্টতা ও সত্যতা না থাকা, তার সঙ্গে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করায়, তারা এই প্রক্রিয়ায় স্বাক্ষর না করেই রেখেছেন।
আখতার হোসেন বলেন, এনসিপির প্রতিষ্ঠাদিন থেকে তারা দাবি করে আসছেন, ৭২ সালের বন্দোবস্ত বিলোপ করে নতুন প্রগতিশীল সংবিধানে যোগ দেন। স্বাধীনতার পর এই পরিকল্পনাগুলোর জন্য ‘জুলাই পথযাত্রা’ কর্মসূচি নিয়েছেন তারা, যা সকল স্তরের মানুষের সমর্থন লাভ করেছে। এই জন্য তারা জাতীয় অঙ্গীকার কমিশনে শক্তিশালী ভূমিকা রাখছেন।
তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি স্পষ্ট নয় এবং এর বৈধতা সংক্রান্ত বহু অনিশ্চয়তা রয়েছে। এই সনদে আইনী বিধান, বাস্তবায়নের নির্দেশনা বা সম্পূর্ণ রূপের বিস্তারিত উল্লেখ নেই। তিনি বলছেন, এই পরিকল্পনা যেন নৈতিক ও আইনী দিক দিয়ে স্বচ্ছ হয়, তার জন্য প্রয়োজন সঠিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতির।
আখতার হোসেন আরও বলেন, এই সনদের আওতায় থাকা কিছু রাজনৈতিক দল কিছু সংবিধানের অনুচ্ছেদ পরিবর্তনের বিষয়ে একমত হয়েছে যা বর্তমানে বিদ্যমান সংবিধানের মূল কাঠামোর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে, ৭২ সালের সংবিধানের আওতায় থেকে এই পরিবর্তনগুলো ভবিষ্যতে আইনি সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে এবং এই সনদ জনগণের সাথে একটি সাংবিধানিক প্রতারণার দিকেও নিয়ে যেতে পারে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তিনি ড. ইউনূসের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, গণভোটের আগে এই ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ’ জারি করতে, যাতে এর আইনী বৈধতা ও উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়।
শেষে, আখতার হোসেন বলেন, ভবিষ্যতের আলোচনা এবং সিদ্ধান্তে তারা জনগণের পাশে থাকবেন এবং কোনোভাবেই এই সনদকে আইনবিরুদ্ধ বা রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য ব্যবহার করা হবে না বলে জানিয়েছেন। তিনি আশা করেন, এই সরকারের সক্রিয় উদ্যোগ নেওয়ার মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছাকে প্রতিনিধিত্ব করবে এবং এই সনদকে কার্যকর করার পদক্ষেপ নেবে।