শ্রীমঙ্গলের পর্যটকদের টিকিট সমস্যা প্রকট

শ্রীমঙ্গলের পর্যটকদের টিকিট সমস্যা প্রকট

দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ও চায়ের রাজধানী হিসেবে পরিচিত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের এবং স্থানীয়দের জন্য ট্রেনের টিকিট পাওয়া এখন এক বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় ট্রেনের আসনে সংখ্যা খুবই অপ্রতুল থাকায়, সাধারণত সাত থেকে দশ দিন আগে সব টিকিট অগ্রিম বুকিং হয়ে যায়। এর ফলে অনেক পর্যটক এবং স্থানীয় যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। উদাহরণস্বরূপ, গত

দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ও চায়ের রাজধানী হিসেবে পরিচিত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের এবং স্থানীয়দের জন্য ট্রেনের টিকিট পাওয়া এখন এক বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় ট্রেনের আসনে সংখ্যা খুবই অপ্রতুল থাকায়, সাধারণত সাত থেকে দশ দিন আগে সব টিকিট অগ্রিম বুকিং হয়ে যায়। এর ফলে অনেক পর্যটক এবং স্থানীয় যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন।

উদাহরণস্বরূপ, গত শুক্রবার ঢাকা থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে এসেছিলেন পর্যটক আরোফিন আহমেদ। বাসে যাত্রা তার জন্য বেশ অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছিল, তাই তিনি ট্রেনে করে ফেরার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু রোববার বা শনিবারের কোনো টিকিটই তিনি পাননি। শেষমেষ, ভোগান্তি সঙ্গী করে তাকে বাসে করে ঢাকায় ফিরতে হয়েছে।

চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক হুমায়রা সুলতানা বললেন, ‘অসংখ্য চেষ্টা করেও আমি ট্রেনের কোনো টিকিট পাইনি। ছোট শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘ সময়ের যাত্রা অত্যন্ত কষ্টদায়ক। আমরা বহুদিন ধরে রেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, কিন্তু এখনো কোন কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

১৯১২ সালে চালু হওয়া শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন থেকে মৌলভীবাজারের তিনটি উপজেলা এবং বিভিন্ন পর্যটন নগরীর অনেক মানুষ প্রতিদিন পথ চলেন। বিশেষ করে, শ্রীমঙ্গলের পর্যটন শিল্প খুবই সুপ্রতিষ্ঠিত, এতে এই স্টেশনের গুরুত্ব অনেক। কিন্তু টিকিট সংকটের কারণে ভ্রমণকারীরা বড় ধরনের ভোগান্তিতে পড়ছেন।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের সূত্র জানায়, ঢাকা যাবার জন্য বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা হলো, কালনী এক্সপ্রেসে ৮১টি, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসে ৭০টি, পারাবত এক্সপ্রেসে ১০৫টি, উপবন এক্সপ্রেসে ৬৫টি, পাহাড়িকা এক্সপ্রেসে ৪৭টি এবং উদয়ন এক্সপ্রেসে ৩০টি।

স্থানীয় ব্যবসায়ী লিটন অধিকারী বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে আমাদের ঢাকায় যেতে হয়। কিন্তু শ্রীমঙ্গল স্টেশনে টিকিটের বরাদ্দ খুবই কম থাকায় সিলেট থেকে বেশি ভাড়া দিয়ে টিকেট সংগ্রহ করতে হয়।’

রাধানগর পর্যটন কল্যাণ পরিষদের যুগ্ম সভাপতি তাপস দাশ বলেন, ‘বর্তমানে শ্রীমঙ্গলে প্রায় ১০০টি হোটেল-রিসোর্ট রয়েছে। দেশ-বিদেশ থেকে প্রতিদিন অনেক পর্যটক আসলেও, ট্রেনের টিকিটের সংখ্যা এতই কম যে, বুকিং শুরু হয়ে যায় দশ দিন আগেই। এর ফলে, পর্যটন শিল্পও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

স্থানীয়রা দাবি করছেন, পর্যটনের সুবিধা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত ট্রেন চালু ও টিকিটেরসংখ্যা বৃদ্ধি করা দরকার।

পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মা বলেন, ‘বিদেশি পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ফিরতি টিকিট। বিদেশি পর্যটকদের জন্য কোনো কোটাও নেই। রাতে ২টার পর ঢাকায় যাওয়া ট্রেন ধরতে খুবই ভোগান্তি হয়, কারণ স্টেশনের পরিচ্ছন্নতা ও ভিআইপি রুমের ব্যবস্থা খুবই খারাপ। নতুন ট্রেন চালু করার পাশাপাশি সময়সূচি আপডেটের দাবি করছি।’

শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশনের মাস্টার সাখাওয়াত হোসেন জানান, ‘শুক্রবার ও শনি দুই দিনই হাজার হাজার পর্যটক আসেন। কিন্তু যাত্রীসংখ্যার তুলনায় টিকিট বরাদ্দ খুবই কম। আমাদের কিছু করার নেই। অনলাইনে আগে থেকেই টিকিট কাটতে হয়, কালোবাজারি বন্ধের জন্য আমাদের কাছে কোনও সুযোগ নেই। তবে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিটের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য চিঠি দিয়েছি।’

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, ‘এই উপজেলার পর্যটন খাত উন্নয়নের জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে, স্টেশনের সব ধরনের সমস্যা সমাধান, ট্রেন ও টিকিটের সংকট দূর করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos