বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক-এগারো সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় বলেন, এই সরকার ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অনিষ্টকারী। তিনি অভিযোগ করেন, সে সময়কার সরকার দেশের সব কিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরাজনীতিকরণ করতে চেয়েছিল। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের শেষ পর্বে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন। তারেক রহমানের কাছে প্রশ্ন ছিল, এক-এগারো বা
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক-এগারো সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় বলেন, এই সরকার ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অনিষ্টকারী। তিনি অভিযোগ করেন, সে সময়কার সরকার দেশের সব কিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরাজনীতিকরণ করতে চেয়েছিল। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের শেষ পর্বে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তারেক রহমানের কাছে প্রশ্ন ছিল, এক-এগারো বা সেনাসমর্থিত সরকারের সময়কাল নিয়ে তার মূল্যায়ন কী? তিনি জোর দিয়ে বলেন, সংক্ষেপে বলতে গেলে, সে সময়কার সরকার ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অর্থাৎ অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি আরও বলেন, সেই সময় দেশে বিভিন্ন ঝড় ঝঞ্ঝার মধ্যে গণতন্ত্রের ভিত্তি ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তারা (এক-এগারো সরকার) সবকিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে চেয়েছে। তাদের অন্যতম লক্ষ্য ছিল দেশকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া। তবে তিনি বলেছিলেন, পরবর্তীতে দেখা গেছে, এর ভিন্ন রূপও চর্চা চলছে, তারা নিজেদেরকে ডেকেছে ‘ডেমোক্রেসির নামে’ নেতৃত্বাধীন একটি নতুন রূপে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ভবিষ্যতে এগিয়ে যেতে চায় এবং দেশের অগ্রগতির জন্য কাজ করছে। ২০০৮ সালে তিনি লন্ডনে নির্বাসিত জীবন শুরু করেন, যেখানে তিনি দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে থাকছেন। এই প্রথম তিনি কোনও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। উল্লেখ্য, এই সাক্ষাৎকারের প্রথম অংশ প্রকাশের পর গত মঙ্গলবার শেষ অংশটি প্রকাশিত হয়।
এই পর্বে তিনি সংস্কার, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক, ওয়াল ইলেভেন এবং অন্যান্য রাজনীতি বিষয়েও আলোচনা করেন। ভারত যদি স্বৈরাচারকে আশ্রয় দিয়ে দেশের মানুষের বিরাগভাজন হয়, তাহলে বিএনপির কিছু করার নেই—এমন মন্তব্য করে তিনি জানান, বাংলাদেশে বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের সিদ্ধান্তটাই চূড়ান্ত। কোনওভাবেই ভারতের সাথে সম্পর্ক এমনভাবে চলবে না যাতে দেশের স্বার্থগুলো ক্ষুণ্ণ হয়। বিএনপি ক্ষমতায় এলে, তিনি বলেন, দেশের স্বার্থকে সর্বপ্রথম গুরুত্ব দেওয়া হবে। সব প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থই তাঁর মূল লক্ষ্য থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য সব কিছু আগে আমার দেশের স্বার্থ। অন্য কোনও দেশের কথা আমি মাথায় রাখব না। আমি আমার দেশের মানুষের স্বার্থই দেখব এবং তার জন্য প্রয়োজনীয় সব করব।’
পানি ও সীমান্ত বিষয়েও তারেক রহমান কঠোর ভাষায় বলেন, ‘আমার পানি অধিকার চাই। ফেলানীর হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনার আমি কখনো মেনে নেব না। দেশের স্বার্থ রক্ষায় সবসময় সোচ্চার থাকব।’
বিএনপি সরকারের সময়ে সাংবাদিকদের ওপর কোনও দমন-পীড়ন হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। তার ভাষায়, ‘আমার মনে হয়, বিএনপি সরকার থাকাকালে সাংবাদিক নির্যাতন বা গুম-খুনের ঘটনা ঘটেনি। এর আগে বা পরে এমন কিছু ঘটেনি।’ তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য ভবিষ্যতেও তিনি অঙ্গীকারবদ্ধ।
সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় তিনি আশ্বাস দেন যে, সব কালো আইন বাতিল ও মুক্ত সাংবাদিকতার জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও মিথ্যা ছড়িয়ে পড়া থেকে সাবধান থাকতে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সত্যিকার তথ্য যাচাই ছাড়া কোনও মতামত বা মন্তব্য শেয়ার না করার পরামর্শ দেন।
সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রত্যেক মানুষের অধিকার আছে মত প্রকাশের। তবে, সাবধানতা অবলম্বন করে সত্যতা যাচাই করাই মূল। ভুল বা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়া রোধে ফ্যাক্টচেকের গুরুত্বও তিনি ব্যাখ্যা করেন।
তারেক রহমান হাসিমুখে বলেন, তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন মিম ও কার্টুন উপভোগ করেন। এই মাধ্যমকে তিনি মানুষের সাথে দ্রুত যোগাযোগের অন্যতম উপকরণ হিসেবে দেখেন। তবে, ডিনামাইটের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এই প্রযুক্তির নেতিবাচক ব্যবহারও হয়, যেমন মানুষের জীবনহানির মতো ভয়ঙ্কর ঘটনা।











