জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চূড়ান্ত করেছে যে, এমপি কোটায় আনা ৩০টি বিলাসবহুল পাজেরো গাড়ি নিলামের পরিবর্তে সরাসরি সরকারি পরিবহন অধিদফতরে হস্তান্তর করা হবে। প্রতিটি গাড়ির বাজারমূল্য আনুমানিক ১২ কোটি টাকা হলেও, নিলামে দর মাত্র ১ লাখ থেকে ৩ কোটি টাকায় পড়ে যাওয়ায় এনবিআর কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য এনবিআর
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চূড়ান্ত করেছে যে, এমপি কোটায় আনা ৩০টি বিলাসবহুল পাজেরো গাড়ি নিলামের পরিবর্তে সরাসরি সরকারি পরিবহন অধিদফতরে হস্তান্তর করা হবে। প্রতিটি গাড়ির বাজারমূল্য আনুমানিক ১২ কোটি টাকা হলেও, নিলামে দর মাত্র ১ লাখ থেকে ৩ কোটি টাকায় পড়ে যাওয়ায় এনবিআর কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য এনবিআর চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজকে চিঠি পাঠিয়েছে।
এছাড়া, এখনো বিভিন্ন জটিলতা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে সরকার। অর্থাৎ, এই ৩০টি গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা হয়েছিল, যারা দ্বাদশ সংসদ সদস্যেরা এই গাড়িগুলো আমদানি করেছিলেন। কিন্তু বন্দর থেকে ছাড় দেওয়ার আগেই সরকারের পতন হওয়ায় গাড়িগুলোর ঝামেলা শুরু হয়। এই পরিস্থিতি নিরসনের জন্য এনবিআর চিঠি দিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ-কমিশনার এইচ এম কবীর জানান, ‘শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা these গাড়িগুলো যানবাহন অধিদপ্তরে হস্তান্তর করা হবে। মোট ৩০টি গাড়ি রয়েছে, এবং এই প্রক্রিয়া নিয়ম অনুসারে সম্পন্ন করা হবে।’
প্রতিটির আমদানি মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা হলেও, জোড়াল শুল্কের কারণে বাংলাদেশে এর বাজারমূল্য সাধারণত ১২ কোটি টাকার বেশি। আওয়ামী লীগের এমপি হিসেবে শুল্কমুক্ত সুবিধায় এসব গাড়ি আমদানি করা হয়। কিন্তু প্রথম নিলামে দর খুবই কম পড়ে যায়, যার ফলে রাজস্ব ক্ষতি হয়। তাই, এবার এনবিআর ভিন্ন পন্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস-এর এক কর্মকর্তা মো. ইয়াকুব চৌধুরী বলেন, ‘প্রথম নিলামে ৬০ শতাংশ দাম কভার না হলে গাড়ি কিনতে পারতাম না। এর ফলে বাজারেও বিক্রি খুবই কঠিন হতো। দ্বিতীয় নিলামে অপেক্ষা করলেও, নতুন সিদ্ধান্তের কারণে সেটা আর হয়নি। এতে সরকারের রাজস্ব আদায় বন্ধ হয়ে যায়।’
অন্যদিকে, নিজের ব্যবহারের জন্য, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আগ্রহ দেখিয়ে ৫টি গাড়ি কিনতে চেয়েছিল, যার ভিত্তি মূল্য ছিল ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। তবে, গাড়িগুলো না কিনে, এক বছর ধরে শেডে রাখায় ফ্রেইট ও ওয়ারফেজ চার্জ দিয়ে যাচ্ছে সরকার। এই বিষয়ে, এনবিআর জানিয়েছে, বন্দরের কোনও আপত্তি নেই, তবে এই খরচ গুলি ট্রাকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে।
বিশেষ করে, এমপি কোটার এই ৩০ গাড়ি ছাড়াও আরও ৩০০ এর বেশি গাড়ি দীর্ঘ বছর ধরে আটকে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, বরভিডার সাবেক সহ-সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘শুল্কের কারণে অনেক গাড়ি কাস্টমসের সামনে পড়ে থাকায় এর মূল্য কমে যায়। যদি সেগুলো ভালো অবস্থায় দ্রুত নিষ্পত্তি করা যেত, তবে সরকার বেশি রাজস্ব পেত।’
উল্লেখ্য, সরকার পতনের আগ মুহূর্তে, অর্থাৎ জুলাই মাসে, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং ব্যারিস্টার সুমনসহ অন্তত ৭ জন গাড়ি ছাড়িয়ে যায়। এ ছাড়া, অভিনেত্রী তারানা হালিম, জান্নাত আরা হেনরী, বিভিন্ন জেলা কালেক্টরেটের কর্মকর্তারা এবং অন্যান্য ব্যক্তিদের গাড়িও আটকে ছিল।