অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের অর্থনীতি মোটের ওপর স্বস্তিতে রয়েছে, যদিও মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়লেও তা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। তিনি মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন। আব্দার ভাষ্যে, আমি অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণে এখন আত্মবিশ্বাসী। এজন্য আমাদের ভিতরে একটি কনফিডেন্স তৈরি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সম্পূর্ণ
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের অর্থনীতি মোটের ওপর স্বস্তিতে রয়েছে, যদিও মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়লেও তা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। তিনি মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন।
আব্দার ভাষ্যে, আমি অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণে এখন আত্মবিশ্বাসী। এজন্য আমাদের ভিতরে একটি কনফিডেন্স তৈরি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সম্পূর্ণ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে খারাপ—কিছু মহল এ বিষয়ে ভুল সংবাদ প্রচার করছে। বাস্তবে, আমাদের মূল্যস্ফীতি মূলত ১১-১৪ শতাংশের মধ্যে ছিল, যা আমরা ৮ শতাংশের নিচে নামাতে সক্ষম হয়েছি। যদি এই হার ৭ শতাংশে নামাতে পারতাম কিংবা ৪ শতাংশে আনতে পারতাম, তাহলে দেশের মানুষের অনুভূতি আরও সুখকর হত।
অর্থ উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, আমাদের এখনো কাজ চলমান রয়েছে—খাদ্য এবং নন-ফুড মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য। এখানে নন-ফুডের তুলনায় আরও বেশি জটিলতা রয়েছে, কারণ এটি ট্রান্সপোর্ট, বাস ভাড়া, এনার্জি খাত এবং বিদ্যুৎসহ অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের দারিদ্র্যহার বেড়েছে—এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অপাত্রিক মন্তব্য এড়িয়ে যান। তিনি বললেন, বাস্তবে দারিদ্র্য বেড়েছে, কিন্তু দারিদ্র্যপরিমাপের পদ্ধতি জটিল, যেখানে অনেক কিছু বিবেচনা করে হিসেব করতে হয়। তিনি বলেন, কিছু প্রেস বা ফরমের মাধ্যমে অনেক ব্যক্তির কাছ থেকে তথ্য নিয়ে দারিদ্র্যবৃদ্ধির পরিমাপ করা হয়, যা সবসময় অবশ্যই নির্ভরযোগ্য নয়।
তিনি আরও যোগ করেন, অমর্ত্য সেন একবার বলেছিলেন যে, দারিদ্র্য পরিমাপের জন্য কঠিন প্রযুক্তিগত বিবরণ প্রয়োজন হয় না। দারিদ্র্য স্বয়ং মানুষ চিনতে পারেন—তার চেহারা, মনোভাব দেখে।
যুক্তরাষ্ট্রের উপর শুল্ক আরোপের প্রশ্নে, তিনি জানান, শুল্ক ইতিমধ্যেই কার্যকর হয়েছি এবং এর প্রভাব পড়েছে। যারা সীমা নির্ধারণের চেষ্টা করছে, তার জন্য ইতিমধ্যে প্রায় ৪০০ কোটি ডলার মূল্যের ক্ষতি হয়েছে।
নির্বাচনের জন্য ৪২০ কোটি টাকা ব্যয়ে বডি ক্যামেরা কেনার বিষয়টিকে কিছু মহলে অপচয় বললেও, অর্থ উপদেষ্টা উত্তর দেন, পরে এ বিষয়ে স্পষ্টতা আসবে।
দেশের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য চীন থেকে ২০টি ফাইটার জাহাজ কিনতে ২২০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। এছাড়া, সাংবাদিকদের আরও প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জানলেই সবকিছু বলে দেওয়া বোঝা দরকার নয়।
ফাইটার জাহাজ কেনার প্রয়োজনীয়তায় তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত নয়, ওনারা মূল্যায়ন করে থাকেন। তিনি বাড়তি কিছু জানাননি।
আরও প্রশ্ন করা হলে, তিনি জানান, এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এখন কিছু বলার নেই।
আইএমএফ এবং বিশ্ব ব্যাংকের পরবর্তী বৈঠক নিয়ে, তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের পরিকল্পনা প্রকাশ করা হচ্ছে না। নতুন সরকার যখন আসবে, তখন বড় বড় সিদ্ধান্ত নেবে—মূল বিষয়গুলো পরবর্তী সরকারের হাতে থাকবে। পাশাপাশি, আইএমএফের কয়েকটি পরিকল্পনা ও কিছু অঙ্গীকারও রয়েছে। অন্য অর্থনৈতিক সংস্থা যেমন এডিবি, এআইডিবি ও বিশ্ব ব্যাংকের জন্য কিছু পরিকল্পনা রয়েছে, যা আপাতত চুক্তি স্বাক্ষর ও আলোচনা পর্যায়ে থাকবে।
নতুন পে-স্কেলের ব্যাপারে জানতে চাইলে, উপদেষ্টা জানান, এই বিষয়টি পরে জানানো হবে।