বৃদ্ধ বয়সেও জীবন সংগ্রামে নিজেকে টিকিয়ে রেখেছেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গুতিয়াবো গ্রামের ৯০ বছরের বৃদ্ধ আব্দুর রশিদ। মানুষের কাছে হাত না পেতেই তিনি একাই প্রতিদিন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। জয়পরাজয় বোঝেন না, বাঁচার জন্য কাজ করতে হবে, তা না হলে ভিক্ষা করতে হবে—এই সত্য তিনি জীবনের অমোঘ বাস্তবতায় স্বীকার করেছেন। বৃদ্ধ বয়সে জীবন সংগ্রামের এই পথ
বৃদ্ধ বয়সেও জীবন সংগ্রামে নিজেকে টিকিয়ে রেখেছেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গুতিয়াবো গ্রামের ৯০ বছরের বৃদ্ধ আব্দুর রশিদ। মানুষের কাছে হাত না পেতেই তিনি একাই প্রতিদিন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। জয়পরাজয় বোঝেন না, বাঁচার জন্য কাজ করতে হবে, তা না হলে ভিক্ষা করতে হবে—এই সত্য তিনি জীবনের অমোঘ বাস্তবতায় স্বীকার করেছেন। বৃদ্ধ বয়সে জীবন সংগ্রামের এই পথ চলা শুরু করেছেন সকালে ঘুম থেকে উঠে সকাল পাঁচটার দিকে। তিনি মূলত চন্ডীতলা এলাকার এক বকুল গাছের নিচে পড়ে থাকা ফুল সংগ্রহ করেন, এরপর নিজস্ব কৌশলে মালা গেঁথে বাজারে বিক্রি করেন।
প্রায় এক ঘণ্টার মতো কাজের পর তিনি প্রতিদিন প্রায় ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা আয় করেন, যা দিয়ে তার সংসার চালিয়ে নিতে সহায়তা হয়। তিনি জানান, প্রচুর ফুল বিক্রি করে বেশ ভালো কিছু টাকা আয় হলেও, মূলত এই কাজের মাধ্যমে তিনি জীবন ও ভালোবাসার মূল্য বুঝতে পান। এক সুন্দর বিকেলের ঘটনা বললেন, “পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকাতে একবার দুটো মালা নিয়ে গিয়েছিলাম, একজন ক্রেতা খুশি হয়ে ৭০০ টাকা দিয়েছিলেন। তখন বুঝতে পারি, মানুষ এখনও ভালোবাসা দিতে জানে।”
আব্দুর রশিদের একটিই স্বপ্ন—নিজের শ্রমে জীবন চালানো, যতদিন শরীর সহ্য করবে, ততদিন নিজেই উপার্জন করে যাবেন বলে দৃঢ় আগ্রহ প্রকাশ করেন। তার পরিবারে আছে দুই ছেলে ও চার মেয়ে, যারা নিজেদের মতো করে জীবনযাপন করছে। তবে, সংসারের খরচ যোগাতে তিনি নিজেকে অবসরহীন শ্রমের মাঝে রক্ষা করছেন।
স্থানীয়রা তার কিছু অসুবিধা দেখলেও, তার পরিশ্রম ও সততার প্রশংসা করেন। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জয়নাল বলেন, “এমন বয়সেও তিনি কাজ করে যাচ্ছেন দেখে আমি অভিভূত। বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করে দেব এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধারও ব্যবস্থা করা হবে।” এই প্রবীণ ব্যক্তির একান্ত স্বাধীনতার জন্য তার সংগ্রাম ও অদম্য সাহস সবাইকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।