আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি সম্পর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ স্পষ্ট করে বলেছেন, কোনও রাজনৈতিক দলের অবৈধ ও অসাংবিধানিক দাবিকে মানা যাবে না, কারণ এর মাধ্যমে দেশের স্থিতিশীলতা বিপন্ন হতে পারে। তিনি বলেন, সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনও দাবি মেনে নিলে দেশের ভবিষ্যৎ ও শান্তি দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।গতকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে আয়োজিত এক
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি সম্পর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ স্পষ্ট করে বলেছেন, কোনও রাজনৈতিক দলের অবৈধ ও অসাংবিধানিক দাবিকে মানা যাবে না, কারণ এর মাধ্যমে দেশের স্থিতিশীলতা বিপন্ন হতে পারে। তিনি বলেন, সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনও দাবি মেনে নিলে দেশের ভবিষ্যৎ ও শান্তি দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।গতকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে এই বক্তব্য দেন তিনি। বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ব্রিটিশ ল স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্সের ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।সালাহউদ্দিন আহমদ পিআর পদ্ধতিকে কার্যকর হলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেন। তিনি এটাও উল্লেখ করেন, পিআর এর মানে হচ্ছে ‘পারমানেন্ট রেস্টলেসনেস’ বা স্থায়ী অস্থিরতা, যা দেশের জন্য অশুভ সংকেত।উদাহরণ হিসেবে তিনি ব্যাখ্যা করেন, বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে পিআর চালুর পরে দীর্ঘ সময় সরকার গঠনে সমস্যা হয়েছে; কোথাও এক বা দেড় বছর লেগে গেছে সরকার তৈরি করতে। এমনকি সরকার গঠন হওয়ার পরও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি; মাস বা এক বছরে অনেক সময় সরকার পতনের মুখে পড়েছে।তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জন্য মূল উদ্দেশ্য পিআর চালু করা শুধু সংসদীয় আসনের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য নয়, বরং এই পদ্ধতি দিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ানো এবং দেশের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি করাই তার মূল লক্ষ্য। এর ফলে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দীর্ঘস্থায়ী হবে, যা দেশের অগ্রগতি ও শান্তির পক্ষে বিপজ্জনক।সালাহউদ্দিন আহমদ আরও অভিযোগ করেন, পিআর নিয়ে বিভিন্ন জরিপ বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। এক জরিপে দেখা গেছে, ৫৬ শতাংশ মানুষ পিআর বোঝে না, আবার অন্য জরিপে দাবি করা হয়েছে, ৭০ শতাংশ মানুষ এই পদ্ধতি চান। এসব বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে বলে তিনি কটাক্ষ করেন।তিনি আরও বলেন, জনগণ যদি আগে থেকে জানে না যে, তাদের ভোটে যে প্রার্থী নির্বাচিত হবে, তা হলে সাধারণ মানুষের সরাসরি গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ অনিরাপদ ও দুর্বল হয়ে পড়বে। এতে করে ভোটদানের সুষ্ঠু প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে।সংবিধান ও আইনের শাসন-এর বাইরে গিয়ে কোনও ধরনের সংস্কার দেশের জন্য শুভ হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় থাকতে চাই। কোনও অবৈধ বা অসাংবিধানিক দাবিকে মানা মানা যাবে না। দেশের স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতির জন্য এই বিষয়গুলো এড়ানো জরুরি।’ ভবিষ্যতে রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারসমূহের মধ্যে জামানতহীন স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, নিরপেক্ষ ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থা, অন্তর্বর্তী সরকার এবং মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার বিষয়গুলো অনিবার্য বলে তিনি মনে করেন।সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং রাগিব রউফ চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সংগঠনের আহ্বায়ক ওয়াসি পারভেজ তাহসিন।