যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল

যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল

ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া রোববার একযোগে। এই স্বীকৃতি তার সঙ্গে শিল্পোন্নত (জি-সেভেন) সাত দেশের মধ্যে যুক্তরাজ্য ও কানাডা প্রথমে স্বীকৃতি প্রদান করল। নিউইয়র্কে শুরু হতে যাওয়া জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে ফ্রান্সসহ অন্যান্য দেশও একই পথে হাঁটবে বলে আশা করা হচ্ছে। কানাডা প্রথম ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। দেশের

ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া রোববার একযোগে। এই স্বীকৃতি তার সঙ্গে শিল্পোন্নত (জি-সেভেন) সাত দেশের মধ্যে যুক্তরাজ্য ও কানাডা প্রথমে স্বীকৃতি প্রদান করল। নিউইয়র্কে শুরু হতে যাওয়া জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে ফ্রান্সসহ অন্যান্য দেশও একই পথে হাঁটবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কানাডা প্রথম ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। দেশের প্রধা‌নমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এক বিবৃতিতে বলেন, আজ থেকে কানাডা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দিচ্ছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই স্বীকৃতি দ্বিপক্ষীয় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে এবং ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে কাজ করবেন।

এরপর অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে বলেন, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আমরা দুটি পক্ষের মধ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করবো। তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই স্বীকৃতি ফিলিস্তিনের হামাসের কোনও ভূমিকা থাকবে না।

এই দুই দেশের স্বীকৃতির পর আধোশের পর, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা করেন। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা বাড়তে থাকায় আমি দ্বিরাষ্ট্রের সমাধান ও শান্তির পথ ধরে চলার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছি। তাই আমি আজ স্পষ্ট করে ঘোষণা করছি যে, যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের পর থেকে সেখানে মানवीস বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার বোমা হামলা ও গুলিতে অসংখ্য ফিলিস্তিনি মারা যাচ্ছে। খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা ব্যবস্থা সংকটের কারণে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা মৃত্যুর মুখে পড়েছেন। ত্রাণ ও সহযোগিতা পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন গাড়ি সীমান্তে আটকে দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি লণ্ডভণ্ড। সাধারণ মানুষ জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছুই অর্জন করতে পারছে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো ইসরায়েলকে সমর্থন করলেও, কিছু পশ্চিমা দেশ এ বিষয়ে আলাদা মত পোষণ করেছে। স্পেন ও আয়ারল্যান্ডের মতো দেশগুলো ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের অনেক দেশ এখনও অবধি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে বা দিচ্ছে। আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বে ১৪৬টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এর মধ্যে ২০২৫ সালের মধ্যে স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলো অধিকাংশই যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। ২০২৪ সালে স্বীকৃতি দেওয়া রাষ্ট্রগুলোর মাঝে রয়েছে বাহামা, ট্রিনিডাড অ্যান্ড টোবাগো, জামাইকা ও বারবাডোস।

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে প্রচেষ্টা চালানো হলেও, তা এখনো সম্ভব হয়নি। তবে, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, যেমন ইউনেস্কো, ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যের মর্যাদা দিয়েছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ সহায়তা বন্ধের কারণ হয়েছে। ২০১১ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক সদস্যপদ লাভের পরিপ্রেক্ষিতে, ফিলিস্তিনকে একটি স্বীকৃত ‘সদস্যহীন পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র’ হিসেবে গণ্য করা হয়।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যেমন- ১৯৮৮ সালের আলজেরিয়ার ঘোষণা থেকে শুরু করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, কাতার, ইরাক, লিবিয়া, মালয়েশিয়া, আফগানিস্তান, এবং দক্ষিণ আমেরিকার অনেক দেশ। বাংলাদেশ ২০১০ সালে অফিসিয়াল স্বীকৃতি দিয়েছে। বিভিন্ন চুক্তি ও ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার স্বপ্ন দীর্ঘদিন ধরে বুকে লালন করছে বিশ্ব সম্প্রদায়।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos