ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেছেন, বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে আমার অন্যতম মূল কৌশল হলো অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত বিচারকদের নিয়োগের মাধ্যমে একটি বিশেষায়িত ‘কমার্শিয়াল কোর্ট’ গঠন করা। এই কমার্শিয়াল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবসায়িক বিরোধের দ্রুত ও কার্যকর নিষ্পত্তি সম্ভব হবে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়াও, আইনি প্রক্রিয়ার সংস্কার
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেছেন, বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে আমার অন্যতম মূল কৌশল হলো অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত বিচারকদের নিয়োগের মাধ্যমে একটি বিশেষায়িত ‘কমার্শিয়াল কোর্ট’ গঠন করা। এই কমার্শিয়াল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবসায়িক বিরোধের দ্রুত ও কার্যকর নিষ্পত্তি সম্ভব হবে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়াও, আইনি প্রক্রিয়ার সংস্কার জরুরি, কারণ দীর্ঘসূত্রিতার কারণে বিদেশি বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে, ব্যবসা-বাণিজ্য চুক্তি, বিনিয়োগ ও মেধাস্বত্ত্ব বিরোধের সংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে, যা নিয়মিত জটিলতা সৃষ্টি করছে। গত মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘ব্যবসায় বিরোধ নিষ্পত্তি ও চুক্তি কার্যক্রমের অগ্রগতি’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খান বিশেষ অতিথি ছিলেন। মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশব্যাপী জনসংখ্যা বাড়ার কারণে আদালতের মামলার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, যা বিচারব্যবস্থাকে আরো দুর্বল করে দিচ্ছে। এর ফলে, স্থানীয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেকটাই বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি জানান, ২০০১ সালে আরবিট্রেশন আইন চালু হলেও, বাণিজ্যসংক্রান্ত বিরোধ সমাধানে তেমন কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এজন্য, প্রথাগত আদালতের বাইরে সুদক্ষ বিচারকদের দ্বারা বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা গেলে, আদালতের উপর বোঝা কমবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য উন্নত হবে। তিনি আরও জানান, কমার্শিয়াল কোর্ট স্থাপনের কাজ অচিরই এগিয়ে যাচ্ছে, আশা করা যায় আগামী এক মাসের মধ্যে এর খসড়া চূড়ান্ত হবে। বিশেষজ্ঞ বিচারকদের নিয়োগ ও আইনি সংস্কারেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন, বাংলাদেশের আইনি প্রক্রিয়ার সংস্কার করতে ইইউ সঙ্গে কাজ করছে, যা দেশের মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা ও আইনি জটিলতার কারণে শুধু বৈদেশিক বিনিয়োগ নয়, দেশের বৃহৎ রপ্তানি ক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তিনি বলেন, ২০০১ সালে আরবিট্রেশন আইন চালু হলেও, সঠিক প্রয়োগ হয়নি। যদি ব্যবসায়িক বিরোধগুলো প্রথাগত আদালতের বাইরে, স্বল্প সময়ে সমাধান হয়, তাহলে বিনিয়োগ বাড়বে এবং জটিলতাও কমবে। ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চুক্তির প্রয়োগের ক্ষেত্রে এখনও বেশ কিছু সমস্যা রয়ে গেছে, যা দ্রুত সমাধান করতে হবে। এ ছাড়া, এই বিষয়ে আরও বিকাশের জন্য সরকারের আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় প্রয়োজন। সেমিনারে ইউরোপীয় উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনডিপি), বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টার (বিয়াক), ঢাকা আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধি ও বিচারকসহ বিভিন্ন Stakeholder উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা চেম্বারের সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান এবং অন্যান্য কর্মকর্তাগণ সাধারণ আলোচনা ও আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন।