বাংলাদেশের অসাধারণ ছক্কা মারার রহস্য কী?

বাংলাদেশের অসাধারণ ছক্কা মারার রহস্য কী?

ছক্কা, ছক্কা আর ছক্কা… বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বর্তমানে রেকর্ডের নতুন নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। শুধুই কি রঙিন চিত্র, না কি আসলেই এই দলটি এত বেশি ছক্কা মারতে সক্ষম, সেটাই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। সত্যিই কি বাংলাদেশ দল এত বেশি ছক্কা মারছে যে তা গুরুত্ব না দিয়ে থাকাই যায় না? বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ বছর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে

ছক্কা, ছক্কা আর ছক্কা… বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বর্তমানে রেকর্ডের নতুন নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। শুধুই কি রঙিন চিত্র, না কি আসলেই এই দলটি এত বেশি ছক্কা মারতে সক্ষম, সেটাই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। সত্যিই কি বাংলাদেশ দল এত বেশি ছক্কা মারছে যে তা গুরুত্ব না দিয়ে থাকাই যায় না?

বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ বছর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের ছক্কা মারার সংখ্যা অন্য দেশের তুলনায় উল্লেখযোগ্য। ২২ ম্যাচে বাংলাদেশের ছক্কা সংখ্যা ১০৯টি, যা তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। এর আগে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের ২০ ম্যাচে ১৩০টি ছক্কা এবং পাকিস্তানের ২৫ ম্যাচে ১৩০টির বেশি ছক্কা মারানো হয়েছে।

দলের পক্ষে যেমন এটি নিঃসন্দেহে গর্বের বিষয়, তেমনি ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ছক্কা মারার ধারাও অসাধারণ। গত বছর বাংলাদেশের ২৪ ম্যাচে রেকর্ড সংখ্যক ১২২টি ছক্কা মারার মাধ্যমে তারা নতুন এক মাইলফলক স্পর্শ করেছিল। আবার এই বছরের প্রথম ১৪ ম্যাচেই তারা ১০৯টি ছক্কা হাঁকাল। এতগুলো ছক্কা মারার প্রক্রিয়া যেন এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটের স্বপ্নের অংশে পরিণত হয়েছে।

বিশেষ করে দুজন ব্যাটসম্যানের কথাই এখন বেশি করে আলোচনায় এসেছে। একটি পঞ্জিকাবর্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ছক্কা মারার রেকর্ড ছিল জাকের আলির, যেখানে তিনি ১৭ ইনিংস খেলতে গিয়ে ২১টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। কিন্তু এই রেকর্ডটি এখন ভঙ্গ হয়েছে পারভেজ হোসেনের হাত ধরে। পারভেজ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে এক মাত্র ছক্কা হাঁকিয়েছেন, কিন্তু সেই একটাই ছিল রেকর্ড ভাঙার মূল কারণ। তার আগে তানজিদ ম্যাচের শুরুতেই ২১ ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন, যা এখানেই শেষ হয়নি। পারভেজের ছক্কা মারার পরই তিনি সঙ্গে থাকলেন আরও দুইটি ছক্কা মারার জন্য, এবং শেষ পর্যন্ত ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি নিজেও গল্প শোনালেন।

তানজিদ জানালেন, মাঠে গিয়ে তিনি উইকেটের পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিকল্পনা করে ব্যাট চালান। বললেন, ‘আমি স্বাভাবিকভাবেই ব্যাটিং করি, উইকেটের আচরণ বুঝে খেলি। আমরা দুজন খুব ভালো যোগাযোগ রাখি এবং আমাদের ইচ্ছা থাকে দ্রুত রান সংগ্রহের।’ তিনি এবং পারভেজের ওপেনিং জুটি এখন বাংলাদেশের জন্য ভরসার কেন্দ্রবিন্দু। দুজনই অনূর্ধ্ব-১৯ দলে একসঙ্গে শুরু করেছিলেন, আর এখন জাতীয় দলে নিজের অবস্থান শক্ত করেন। তানজিদ বললেন, ‘আমরা একসঙ্গে কথা বলে কীভাবে পরিকল্পনা করতে হবে, কোন বোলারকে টার্গেট করে খেলতে হবে, এসব সিদ্ধান্ত নিই। এই যোগাযোগ আমাদের পারস্পরিক সফলতার চাবিকাঠি।’

টিম বাংলাদেশ এখন আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের নতুন ধারা গ্রহণ করছে, যা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে তাদের কথাবার্তা আর শরীরী ভাষায়। একে একে দেখা দেয় আবার নতুন ছক্কা রেকর্ড, যা দলটির নতুন মনোভাবের প্রতিফলন। তাহলে কি এখন বাংলাদেশ দলের ‘ইন্টেন্ট’ বদলে গেছে এই সংক্ষিপ্ত ফর্ম্যাটে?

তানজিদ বললেন, ‘আমাদের পুরো দলকে দূর্বল না করে দেওয়া হয়েছে; সবাই যেন স্বাভাবিকভাবে খেলতে পারে। প্রত্যেকের ভূমিকাটি স্পষ্ট করা আছে, আর সেটা চেষ্টাও করছি অক্ষরে অক্ষরে।’

অভিনব এই আক্রমণাত্মক ক্রিকেটে আরও উন্নতি করতে গিয়েই বাংলাদেশ পাওয়ার হিটিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন জুলিয়ান উডকে। ২৮ দিনের চুক্তি শেষে তিনি ফিরে যাবেন ৩ সেপ্টেম্বর। তার কাছ থেকে ক্রিকেটাররা কি শিখছেন, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। তানজিদ ইতিমধ্যেই প্রচুর ছক্কা মারেন, তবে পাওয়ার হিটিংয়ের কৌশল যেন আরও উন্নত হয়—এটিই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos