চোটের কারণে লিগস কাপের কোয়ার্টার ফাইনালসহ ইন্টার মায়ামির সর্বশেষ দুটি ম্যাচে লিওনেল মেসি মাঠে নামতে পারেননি। তিগ্রেসের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে জর্দি আলবা দ্বিতীয়ার্ধে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন, যা নিয়ে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল। চিকিৎসক ও দলের মধ্যে আলোচনা চলছিল, এ ম্যাচে তারা খেলতে পারবেন কি না, তা পরবর্তী সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।

ফ্লোরিডার চেজ স্টেডিয়ামে লিগস কাপে সেমিফাইনালে বার্সেলোনা দিনের মতো আঙিনায় ফিরে আসেন, যেখানে মেসি और আলবা মাঠে থাকতেন। দুজনের সামঞ্জস্যতা দেখে অনেকের মনে পড়ে ফিরেছেন প্রোফেশনের দিনগুলোর সুপ্রতিষ্ঠিত দিনগু৷ কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘জাস্ট লাইক ওল্ড টাইমস’। আসল কারণ ছিল ৮৮ মিনিটে মেসি ও আলবার যৌথ গোল, যা ম্যাচের দৃশ্যপট বদলে দেয়।

প্রথমার্ধে খেলা অরল্যান্ডো সিটির পক্ষে যায়, যেখানে যোগ করা সময়ে এক গোল করে এগিয়ে যায়। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শেষ ১৫ মিনিটে মেসি জোড়া গোল করে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন, এবং ৩-১ গোলের এই ফল নিয়ে ইন্টার মায়ামি লিগস কাপের ফাইনালে উঠে যায়।

প্রথমার্ধের শুরু থেকেই মায়ামি আধিপত্য দেখায়। চোট কাটিয়ে ফিরে আসা মেসি আরও বেশি ক্ষুধার্ত ছিলেন। প্রথমার্ধেই বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করে নিয়েছিলেন। তবে প্রথমার্ধের যোগকালে লেফট ব্যাক ম্যাক্সিমিলিয়ানো ফ্যালকনের ভুলে সিটি গোল করে। ডিফেন্ডার বল ‘ক্লিয়ার’ করতে পারেনি, ফলে অরল্যান্ডোর উইঙ্গার মার্কো পাসালিচ জোরালো শটে গোল করেন। ফ্যালকন দাবি করেন পাসালিচের হ্যান্ডবলের জন্য, কিন্তু রেফারি কোন সিদ্ধান্ত নেননি।

মায়ামি ম্যাচে ফিরেছে ৭৫ মিনিটে পাওয়া পেনাল্টি থেকে। অরল্যান্ডো ডেভিড ব্রেকালো তাদের বক্সে ফেলে দেয়, যার জন্য সে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়ে। সেই সুযোগে মেসি বাঁ পা দিয়ে গোল করেন।

১০ জনে পরিণত হওয়া অরল্যান্ডো এর মধ্যে তাদের একটি গোল পায়। সেটা সে সময় হয়েছিল, যখন অরল্যান্ডোর হেটার বক্সে আলবার পাস দিয়ে তেড়ে যান মেসি। বার্সেলোনায় খেলার স্মৃতি মনে করে দর্শকরা অপেক্ষায় ছিলেন কি হবে। মেসি ড্রিবলিংয়ে যেমন সতর্ক ছিলেন, আলবা তাকে ফিরতি পাস দেন। তারপর দৌড়ের ওপর থেকে বাঁ-কোণে নিখুঁত শটে গোল করে ফেলেন, এবং এই গোলের মাধ্যমে তার গোলসংখ্যা আজ ২৭ এ পৌঁছেছে।

অরল্যান্ডো সত্যি কঠিন সময় যাচ্ছে। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে লুইস সুয়ারেজের পাস থেকে ভেনেজুয়েলান মিডফিল্ডার তেলেসকো সেগোভিয়া গোল করে ম্যাচের শেষ রূপ দেন।

বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোরে অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল, যেখানে মায়ামি মোকাবিলা করবে সিয়াটল সাউন্ডার্সের মুখোমুখি। এই জয় দিয়ে তারা আগামী বছর কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের জন্যও যোগ্যতা অর্জন করেছে।

প্রথমবারের মতো এই ম্যাচের শেষ পর্যায়ে উচ্ছ্বাসে ভাসেন মেসি, যেখানে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের জন্য এই ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ প্রতিপক্ষ ছিল শক্তিশালী। এ বছর তাদের বিপক্ষে দুবার হেরেছি। প্রথমার্ধে আমরা কিছুটা ভয়ের মধ্যে ছিলাম, কিন্তু পরে সব কিছু সহজ হয়ে যায়।’