বাংলাদেশের বর্তমান আর্থসামাজিক, ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও আলোচনা সভায় তিনি এই মত প্রকাশ করেন। এই সভা, যা জন্মাষ্টমী উৎসবের অংশ হিসেবে আয়োজিত, ভার্চ্যুয়ালি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে
বাংলাদেশের বর্তমান আর্থসামাজিক, ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও আলোচনা সভায় তিনি এই মত প্রকাশ করেন। এই সভা, যা জন্মাষ্টমী উৎসবের অংশ হিসেবে আয়োজিত, ভার্চ্যুয়ালি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে তারেক রহমান যোগ দেন। বক্তৃতায় তিনি বলেন, “কাকে কিংবা কোন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করা হবে, এটি জনগণের স্পষ্ট জানার অধিকার রয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত পিআর পদ্ধতিতে বিশেষ করে যেভাবে নির্বাচিত ব্যক্তির পরিচয় জেনে নেওয়া যায় না, এতে জনগণের স্বচ্ছ ধারণা ও আস্থা অর্জন কঠিন হয়। এজন্য, যারা সংসদ বা সরকারের প্রতিনিধিত্ব করতে চান, তাদের জনগণের কাছে গিয়ে আস্থার ভিত্তিতে ভোট চাইতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “পিআর পদ্ধতি ও অন্যান্য বিষয়সংক্রান্ত কিছু মতভেদ অবশ্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমাধান হবে। কিন্তু যারা আসন্ন নির্বাচনের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তুলতে চাচ্ছেন, তারা হয়তো গণতন্ত্রের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করছেন। একই সঙ্গে, পতিত সরকার বা স্বৈরাচারী শাসনের পুনর্বাসনের পথও সহজ করে দিচ্ছেন।” তারেক রহমান বলেন, “নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চাইছে কিছু রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি। তবে জনগণ যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে ভোট দেয়, বাংলাদেশে পরিবর্তনের দায়িত্ব তারাই গ্রহণ করবে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিবর্গও লক্ষ্য করেছেন, এই বিভ্রান্তি ও অপচেষ্টা শক্তি হারাচ্ছে।” তিনি সতর্ক করে বলেন, “বাজে কৌশল বা অপ্রয়োজনীয় শর্তের পেছনে না ছুটে, রাজনৈতিক দৃঢ়তার সঙ্গে জনগণের শক্তির উপর আস্থা রাখুন। জনগণের ভোটের মাধ্যমে যদি বিজয় অর্জিত হয়, তবে সেটিকে বাধাগ্রস্ত করার প্রচেষ্টায় পানি পড়বে।” তারেক রহমান বলেন, “পরস্পরের মধ্যে মতভেদ থাকলেও, গভীর রাজনৈতিক ঐক্য, স্বার্বভৌমত্ব ও দেশের সার্বভৌম স্বার্থে ঐকমত্য জরুরি। এগুলি ব্যত্যয় হলে দেশের অস্থিতিশীলতা ও অপশক্তির সুবিধা হবে।” হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, “ভবিষ্যৎ বাংলাদেশত এক নিরাপদ দেশ গড়ার জন্য, সরকারের কাছে আশা করছি, আসন্ন নির্বাচন হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য বড় সুযোগ। আগামী ভোটে আপনাদের সমর্থন ও সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্ব রাখে।” হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি উল্লেখ করেন, “বিগত বিভিন্ন সময়ে অপরাধমূলক হামলার ঘটনা ঘটলেও বেশির ভাগই ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ধর্মীয় কারণের জন্য এই হামলা হয়নি। সরকারের দায়িত্ব, যেন কারো ওপর অযথা হামলা বা অসচ্ছলতা না ঘটে, তার ব্যবস্থা নেওয়া।” আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হিন্দু নেতাকর্মীরাও এতে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, গণফোরাম ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার এবং ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী।