আশুলিয়ায় গুলিতে নিহতের বাবার কান্নাজড়িত সাক্ষ্য ও গল্প

আশুলিয়ায় গুলিতে নিহতের বাবার কান্নাজড়িত সাক্ষ্য ও গল্প

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন আশুলিয়ায় ঘটে যাওয়া একটি গুরুতর ও বর্বরতার ঘটনার সাক্ষ্য দেয়ার সময় আহত ও বেদনাক্লিষ্ট পরিস্থিতিতে পড়েন নিহতের বাবা, এনাব নাজেজ জাকি। তিনি পুরো ঘটনা চমৎকারভাবে বর্ণনা করেন এবং নিজের চোখের সামনেই ঘটে যাওয়া বিভীষিকাময় ঘটনা দেখিয়ে আদালতকে গভীর শোক ও ব্যথার সঙ্গে জানান, তার ছেলে আস-সবুরের লাশ এই মুহূর্তে তার

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন আশুলিয়ায় ঘটে যাওয়া একটি গুরুতর ও বর্বরতার ঘটনার সাক্ষ্য দেয়ার সময় আহত ও বেদনাক্লিষ্ট পরিস্থিতিতে পড়েন নিহতের বাবা, এনাব নাজেজ জাকি। তিনি পুরো ঘটনা চমৎকারভাবে বর্ণনা করেন এবং নিজের চোখের সামনেই ঘটে যাওয়া বিভীষিকাময় ঘটনা দেখিয়ে আদালতকে গভীর শোক ও ব্যথার সঙ্গে জানান, তার ছেলে আস-সবুরের লাশ এই মুহূর্তে তার সামনে রয়েছে। কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি, আর আদালত কক্ষে তখন নীরবতা অব্যাহত থাকে। তিনি বললেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সকালে আশুলিয়া থানার সামনে পুলিশ গুলিতে তার ছেলে নিহত হন। আর তার লাশের সেই দিনই পোড়ানো হয় পেট্রোল দিয়ে।

নাজেজ জাকি জানান, এক দিন আগে অর্থাৎ ৫ অগাস্ট সকালে তার ছেলে বাসা থেকে বেরিয়ে মিছিলের অংশ নিয়ে যায়। পথে কোথাও গোলাগুলি চলছে শুনে তিনি বড় ভাই রেজোয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দুপুরের দিকে তিনি ফোন করে জানিয়ে দেন, অনেক লোক গুলিবিদ্ধ ও পড়ে যাচ্ছে। সে সময় তার বড় ভাই তাকে আশুলিয়া থেকে চলে আসার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু সে মিছিলে যোগ দিয়ে আশুলিয়া থানার দিকে যায়। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে আশ্রয় নেয় একটি বাসায়, যেখানে তখন ব্যাপক গোলাগুলি চলছিল। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। রাত ৮টা পর্যন্ত মোবাইল বন্ধ ছিল। পরদিন সকালে বিভিন্ন হাসপাতালে ও ক্লিনিকে খোঁজার পরে টের পান, তার ছেলের লাশ পোড়ানো হয়েছে।

আশুলিয়ায় লাশগুলো শনাক্ত করতে গেলে, তার ভাই ও খালাতো ভাইয়ের সহায়তায় তিনি লাশের পোড়া অংশ, মোবাইলের সিম কার্ড দেখে তার ছেলেকে শনাক্ত করেন। এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, লাশের চেহারা খুবই বিভৎস ছিল, তাকে চেনা বেশ কষ্টকর। শেষ পর্যন্ত ৬ অগাস্ট দ্বিতীয় জানাজা হয়, এরপর রাত ৮টায় লাশ গ্রামের বাড়ি নওগাঁতে নিয়ে যায় এবং পরের দিন সকালে দাফন করা হয়।

লোকের চোখে না পড়ে এরকম কাপুরষোচিত হত্যাকাণ্ডের ভিডিওও তিনি নিজের কাছে রাখেন। আদালতকে দেখানো হয়, যেখানে দেখা যায় আহত লাশকে ভ্যানের উপর চেপে তোলা হচ্ছে, এবং পরে পুলিশের গাড়ি থেকে সেই লাশ পোড়ানো হচ্ছে। এই ভিডিওগুলো দেখানোর সময়, নিহতের বাবা কেঁদে ফেলেন এবং বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের জন্য শীঘ্রই দোষীদের বিচার হওয়া উচিত। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার ও পুলিশের কিছু উস্কানিমূলক নির্দেশে তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। পাশাপাশি, তিনি আরও অভিযোগ করেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আল মামুন এবং অন্য কিছু পুলিশ কর্মকর্তার মদদে এই বর্বর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

তিনি দাবি করেন, এ ঘটনার পেছনে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তা, ডিবির এসআই, উপপুলিশ কমিশনার ও কিছু রাজ্বজনের ষড়যন্ত্র ছিল, যারা পুলিশ ভ্যানের মাধ্যমে তার ছেলেকে তুলে ধরে হত্যা করে। এই ঘটনায় তাঁর জীবনের গভীর শোক ও ক্রোধ প্রকাশ করে, তিনি বিচার দাবি করেন।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos