প্রধান বিচারপতির প্রস্তাব: পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা

প্রধান বিচারপতির প্রস্তাব: পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা

দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও বিচার ব্যবস্থার চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে একটি পৃথক বাণিজ্যিক আদালত ব্যবস্থা গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি এই প্রস্তাবটি ব্যক্ত করেন গতকাল রোববার সিলেটের দ্য গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে, যেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কতৃপক্ষের কাছে এ দাবি উপস্থাপন করেন। এই

দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও বিচার ব্যবস্থার চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে একটি পৃথক বাণিজ্যিক আদালত ব্যবস্থা গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি এই প্রস্তাবটি ব্যক্ত করেন গতকাল রোববার সিলেটের দ্য গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে, যেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কতৃপক্ষের কাছে এ দাবি উপস্থাপন করেন। এই সেমিনারটি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট এবং ইউনাইটেড নেশন্স ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয়।

প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন, বর্তমানে দেশে বাণিজ্যিক বিরোধের সমাধানে কোনও বিশেষ আদালত নেই, ফলে কয়েক কোটি টাকার সংশ্লিষ্ট বিরোধগুলো ছোটখাটো দেওয়ানি মামলার মধ্যে একসাথে নিষ্পত্তি হয়। এই কারণে বিচারপ্রক্রিয়া ধীরগতি হয় এবং বিচারকগণের উপর চাপ বাড়ে। তিনি বলেন, এটি বিচারকদের প্রতি কোনো আক্রোশ বা অপমানের ব্যাপার নয়, বরং এটি একটি কাঠামোগত অসঙ্গতি। এর ফলশ্রুতিতে মামলার জট বেড়ে যাচ্ছে এবং ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও বিনিয়োগের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি একজন পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে জানান, ২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত অর্থঋণ আদালতে প্রায় ২৫ হাজারের বেশি মামলা অমীমাংসিত রয়ে গেছে।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেছিলেন যে, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার সংস্কার অপরিহার্য; কারণ দেশের বিভিন্ন অংশে ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে আসছেন। তিনি রুয়ান্ডা, ভারত ও পাকিস্তানের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, এসব দেশের বাণিজ্যিক আদালত গড়ে ওঠার ফলে তারা দক্ষ, স্বচ্ছ ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন, যা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা সরবরাহ করে।

তিনি প্রস্তাবিত বাণিজ্যিক আদালতের সাতটি মূল ভিত্তির কথা উল্লেখ করেন: স্পষ্ট ও একীভূত এখতিয়ার নির্ধারণ, ধারাবাহিক আর্থিক পর্যায়বদ্ধতা, বাধ্যতামূলক কেস ম্যানেজমেন্ট ও কঠোর সময়সীমা, সমন্বিত মধ্যস্থতা ব্যবস্থা, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন ই-ফাইলিং ও ডিজিটাল ট্র্যাকিং, সবের জন্য ন্যায়সংগত প্রবেশাধিকার, পাশাপাশি জবাবদিহিতা ও কর্মক্ষমতা পর্যবেক্ষণ। তাঁরা জোর দিয়ে বলেন, এই আদালতের কার্যক্রম সম্পূর্ণ কার্যকর, জবাবদিহমুলক এবং ব্যবসার চলমান চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে হবে।

সেমিনারে সূচনাধ্বনি দেন সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাফর আহমেদ। আলোচনায় অংশ নেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার ও ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লিলার।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos