পি কের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

পি কের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

দেশের আর্থিক খাতে ব্যক্তি পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য জালিয়াতির ঘটনা ঘটিয়েছেন আলোচিত পি কে হালদার। নানা কৌশলে নামে-বেনামে একের পর এক কোম্পানি খুলে, জালিয়াতি প্রতারণার মাধ্যমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে পথে বসিয়েছেন এই প্রতারক। তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়,

দেশের আর্থিক খাতে ব্যক্তি পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য জালিয়াতির ঘটনা ঘটিয়েছেন আলোচিত পি কে হালদার। নানা কৌশলে নামে-বেনামে একের পর এক কোম্পানি খুলে, জালিয়াতি প্রতারণার মাধ্যমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে পথে বসিয়েছেন এই প্রতারক। তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন। এই চার কোম্পানি হল- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)।

প্রতারণা করতে পি কে হালদার গড়ে তোলেন একাধিক কাগুজে প্রতিষ্ঠান। অস্তিত্বহীন ৩০-৪০টি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ঋণের নামে জালিয়াতি করে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে পিঅ্যান্ডএল অ্যাগ্রো, পিঅ্যান্ডএল ইন্টারন্যাশনাল, পিঅ্যান্ডএল ভেঞ্চার, পিঅ্যান্ডএল বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, হাল ট্রাভেল, হাল ইন্টারন্যাশনাল, হাল ট্রিপ, হাল ক্যাপিটাল, হাল টেকনোলজি, সুখাদা লিমিটেড, আনন কেমিক্যাল, নর্দার্ন জুট, রেপটাইল ফার্মসহ আরও একাধিক প্রতিষ্ঠান।

এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় আছেন পি কে হালদারের আত্মীয়রা। তার মা লীলাবতী হালদার, ভাই প্রীতিশ কুমার হালদার ও তার স্ত্রী সুস্মিতা সাহা, খালাতো ভাই অমিতাভ অধিকারী, অভিজিৎ অধিকারীসহ বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের নামে প্রতিষ্ঠান খোলা হয়। ব্যাংক এশিয়ার সাবেক এমডি ইরফানউদ্দিন আহমেদ ও সাবেক সহকর্মী উজ্জ্বল কুমার নন্দীও আছেন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মালিকানায়।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, পি কে হালদার ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬ হাজার ৭৯০ শতাংশ জমি কিনেছেন। এই বিপুল জমি তিনি নামে-বেনামে কিনেছেন। এই জমির বাজারমূল্য দেখানো হয়েছে ৩৯১ কোটি ৭৫ লাখ ৮১ হাজার ১২ টাকা। এর মধ্যে নিজের নামে তিনি জমি কিনেছেন ৪ হাজার ১৭৪ শতাংশ।

পি কে হালদার তার কাগুজে কোম্পানি ক্লিউইস্টোন ফুডসের নামে কক্সবাজারে ২ একর জমির ওপর আটতলা হোটেল নির্মাণ করেছেন। হোটেলটির আর্থিক মূল্য এখন ২৪০ কোটি টাকা।

এ ছাড়া খালাতো ভাই অমিতাভ অধিকারী এবং অনঙ্গ মোহন রায়ের নামে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ৪০৪ শতাংশ জমি কিনেছেন পি কে হালদার, যার বাজারমূল্য ১৬৭ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও কানাডিয়ান ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্যের বরাত দিয়ে দুদক বলছে, ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভাই প্রীতিশ হালদারের কাছে ১ কোটি ১৭ লাখ ১১ হাজার ১৬৪ কানাডীয় ডলার বা বাংলাদেশি টাকায় ৮০ কোটি টাকা পাচার করেন পি কে হালদার।

দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, পি কে হালদার তার নিজের, আত্মীয়, বন্ধু ও কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে আটটি কোম্পানিতে বিপুল অংকের টাকা বিনিয়োগ করেছেন, যার ‘বৈধ কোনো উত্স’ অনুসন্ধানে মেলেনি। এসব অভিযোগে দুদকে আলাদা অনুসন্ধান ও তদন্ত করছেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান।

এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত এ পর্যন্ত পি. কে হালদারের সহযোগী ৮৩ জন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়েছে। প্রায় ১০০০ কোটি টাকার সমমূল্যের জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাটসহ অন্যান্য স্থাবর সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে। ৬৪ জন আসামি ও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। ১৩ জন আসামিকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ১১ জন আসামি আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। অর্থ আত্মসাতের অভিয‌োগের পি কে হালদার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩৪ টি মামলা হয়েছে।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos