আশা জাগাচ্ছে শেয়ারবাজার

আশা জাগাচ্ছে শেয়ারবাজার

ধারাবাহিক উত্থান বজায় রেখে চলছে শেয়ারবাজার। করোনা ভাইরাস শুরু হওয়ার পর এমন ধারাবাহিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আর দেখা যায়নি। গতকাল সপ্তাহের প্রথম দিনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। আর লেনদেন ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। টানা উত্থান ও লেনদেনের পরিমাণ বাড়ার কারণে বিনিয়োগকারীরা আশাবাদী হচ্ছেন। আর আস্থার সংকট তো

ধারাবাহিক উত্থান বজায় রেখে চলছে শেয়ারবাজার। করোনা ভাইরাস শুরু হওয়ার পর এমন ধারাবাহিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আর দেখা যায়নি। গতকাল সপ্তাহের প্রথম দিনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। আর লেনদেন ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। টানা উত্থান ও লেনদেনের পরিমাণ বাড়ার কারণে বিনিয়োগকারীরা আশাবাদী হচ্ছেন। আর আস্থার সংকট তো দূর হতে শুরু করেছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার আলো দেখা যাচ্ছে।

শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ও শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, শেয়ার-বাজারে ধারাবাহিকভাবে উত্থান বিনিয়োগকারীদের আশাবাদী করছে। এ ধারাবাহিকতা ঠিক রাখতে হবে। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা দূর করতে এবং ভালো শেয়ার বাজারে আনতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) খুব ভালো ভূমিকা রাখছে। এই ধারাবাহিকতা রাখতে হবে। তবে বাজারে এখনো কিছু খারাপ বিষয় রয়েছে সেগুলোর দিকে কমিশনকে নজর দিতে হবে।

গত ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ১৪ কার্যদিবসই শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। গতকালও আগের দিনের ধারাবাহিকতায় ডিএসই এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের উত্থান হয়েছে। মহামারি করোনা শুরুর পর শেয়ারবাজারে এমন টানা উত্থান আর দেখা যায়নি। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ১৫৬ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৮৫৯ পয়েন্টে উঠে এসেছে। গতকাল ডিএসইতে ১ হাজার ৩৫১ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিন থেকে ১৪৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২০৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকার।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, একদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন কমিশনের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি, অন্যদিকে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমে যাওয়ায় বাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা মত দিয়েছেন।

এদিকে গত মার্চে যখন করোনা দৃশ্যমান হলো তখন শেয়ারবাজারের অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে যায়। বিনিয়োগকারীদের পুঁজি রাতারাতি অনেক কমে যায়। বিশেষ করে যেসব বিনিয়োগকারী মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিল, তাদের পুঁজির পুরোটাই অদৃশ্য হয়ে যায়। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিএসইসির নির্দেশনা মেনে ভালো শেয়ারে বিনিয়োগ করতে ঋণ দেয়। তবে দেশের শেয়ারবাজারে বিদ্যমান নেতিবাচক অবস্থার কারণে এ ভালো শেয়ারগুলোর মূল্যপতন হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এমন পরিস্থিতির পরও আশার বিষয় হচ্ছে নতুন কমিশনের কার্যক্রমে আর অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মে অচিরেই এই অবস্থার অনেকটা উত্তরণ ঘটবে। কিন্তু, শেয়ারগুলো ফোর্সড সেল হয়ে গেলে—তখন তো ঋণগ্রহীতা বিনিয়োগকারীরা সবটুকুই হারাবে বলে সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা।

শিল্প স্থাপনে ব্যাংকের চেয়ে পুঁজিবাজারই টাকা জোগান দেওয়ার রীতি দুনিয়া জুড়ে। আর ব্যাংক কেবল পরবর্তী সময়ে ঐ শিল্পের জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল দিয়ে থাকে। পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশের পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ৮০ ভাগ। অথচ আমাদের দেশে তার উলটো। এখানে ৮০ ভাগ ব্যক্তি বিনিয়োগকারী আর ২০ ভাগ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। এই ব্যক্তি বিনিয়োগকারীরাই এর আগে ১৯৯৬ আর ২০১০ সালের শেয়ারবাজার ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরকে এই অবস্থা থেকে উত্তরণের দায়িত্ব সরকারকে নেওয়ার জন্য বিনিয়োগকারীরা দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। তাদের মতে, এতে একদিকে যেমন বিনিয়োগকারীরা বেঁচে যাবে, অন্যদিকে পুঁজিবাজারও বাঁচবে। কারণ, পুঁজিবাজার না বাঁচলে, দেশের অর্থনীতিকে ঠিক রাখা কঠিন হবে।

Staff Reporter
ADMINISTRATOR
PROFILE

Posts Carousel

Latest Posts

Top Authors

Most Commented

Featured Videos