গত ২৪ শে ডিসেম্বর ২০১৮ ইং, সোমবার ঢাকা চীফ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এফরাত হাসান নামের এক ব্যাক্তি ৬২ জন মুক্তমনা লেখকদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা করেন। “এথিস্ট ইন বাংলাদেশ” নামক একটি ম্যাগাজিনের লেখাকে কেন্দ্র করে পাবলিশার ও ম্যাগাজিনটির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ডবিধির ২৯৫ ধারাতে মামলা করা হয়। এই মামলার আসামীদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছেন, সম্পাদক আরিফুর রহমান, আরমান
গত ২৪ শে ডিসেম্বর ২০১৮ ইং, সোমবার ঢাকা চীফ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এফরাত হাসান নামের এক ব্যাক্তি ৬২ জন মুক্তমনা লেখকদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা করেন। “এথিস্ট ইন বাংলাদেশ” নামক একটি ম্যাগাজিনের লেখাকে কেন্দ্র করে পাবলিশার ও ম্যাগাজিনটির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ডবিধির ২৯৫ ধারাতে মামলা করা হয়। এই মামলার আসামীদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছেন, সম্পাদক আরিফুর রহমান, আরমান আহমেদ, পিনাকী দেব অপু, সৈয়দ ইশতিয়াক হোসেন শাওন, মোঃ তোফায়েল হোসেন, আদনান সাকিব, রুজভেল্ট হালদার, আবু হানিফ, সৈয়দ মোহাম্মদ সজীব আবেদ, সৈয়দ সানভী অনিক হোসেন, এনায়েতুল হুদা, এম ডি আব্দুল্লাহ আল হাসান, আসিফ আবরার টিটু , মিল্টন কুমার দে, চিন্ময় দেবনাথ, আবু তাহের মোঃ মুস্তাফা, মুহম্মদ আবদুর রহমান, হায়াত হামিদুল্লাহ রবিন, অরুণাংশ চক্রবর্তী, বিপ্লব পাল, পলাশ সরকার, নাঈমুল ইসলাম, সৈয়দ ইশতিয়াক হোসেন, আব্দুর রহমান, জাওয়াদ নির্ঝর, হোসনী মোবারক, কাজী রুবেল হোসেন, ইমরুল কায়েস প্রমুখ
আমাদের আদালত প্রতিনিধির মাধ্যমে জানা যায় যে, বাদী এই উক্ত ম্যাগাজিনে আল্লাহ ও নবী-রাসুল সম্পর্কে কটুক্তি ও নোংরা ভাষার লেখা দেখতে পেয়ে আর নিজেকে সংবরন করতে পারেন নি। বাদী এফরাত জানান যে, এই ম্যাগাজিনে সকল লেখকদের মধ্যে কয়েকজন বিবাদী তার পূর্ব পরিচিত। ফেসবুকে সে তাদের নিয়মিত লক্ষ্য করে যে কিনা ধর্ম নিয়ে তার ব্লগে ইচ্ছেমত নোংরা ভাষায় ইসলাম ধর্মের নবী, রাসুল, সাহাবা-কেরামদের বিরুদ্ধে মন গড়া কথা লিখতে থাকে। তাদের এমন অবস্থা দেখার পর বাদী নিজেকে আর সংবরন করতে পারেন নি আইনের আশ্রয় নেয়া ছাড়া। বাদী এফরাত বলেন যে, যদি এই ম্যাগাজিনের এইসব নাস্তিকদের আল্লাহ ও রাসুল নিয়ে এইসব নোংরা লেখা লেখার অধিকার থাকে তাহলে তারও মাওলা করে আইনের আশ্রয় চাইবার অধিকার রয়েছে। আর আইন যদি এদের বিচার না করতে পারে তাহলে এদের কাউকেই ছাড়া হবে না বলে তিনি হুশিয়ারী দেন। ছাড়া হবে না বলতে তিনি কি বুঝিয়েছেন জানতে চাইলে এফরাত বলেন, “সেটা সময় বলে দিবে”
এইদিকে বাদীদের সাথে নানাভাবে যোগাযোগ করবার চেষ্টা করা হলেও তারা কোনোভাবেই এই প্রতিবেদককে সাড়া দেন নাই।
এদিকে এই ম্যাগাজিনকে নিষিদ্ধ ঘোষনার দাবী জানিয়ে হেফাজতী ইসলাম এক জরুরী সভার আয়োজন করে। এই সভায় বলা হয় যে বাংলাদেশে কোনো নাস্তিক ও মুরতাদ থাকতে পারবে না এবং অবিলম্বে এই এথিস্ট ইন বাংলাদেশের সকল প্রকাশনা নিষিদ্ধ এবং এদের ওয়েব সাইটকে বাংলাদেশ থেকে ব্যান করবারও দাবী জানানো হয় উক্ত সভাতে।
এই ঘটনায় ফেসবুকে অত্যন্ত তোলপাড় শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তমনা লেখকেরা এই মামলার বিরোধিতা করে বলেছেন এখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। ব্লগার ও লেখক আশরাফুল ইসলাম রাতুল বলেছেন, “এইভাবে ক্রমাগতভাবে আদালতের বা পুলিশের ভয় দেখিয়ে মুক্তমতকেই আসলে দমিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ এখন মোল্লাদের দেশ হয়ে গেছে”
এদিকে এই ঘটনার তদন্ত ভার পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে দিয়ে আগামী ২৮ শে জানুয়ারী প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। তারা এই মামলার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হন নাই।